প্রতীকী ছবি
সকাল ন’টা। আর পাঁচটা দিনের মতোই রাস্তায় লোকজন কম। জরুরি কাজে বাইরে বেরিয়েছিলেন কল্যাণী বি ব্লকের বৃদ্ধা জয়ন্তী নাথ। আচমকা পিছন দিক থেকে একটি কালো রঙের মোটরবাইক তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়। সওয়ারি দু’জন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর ব্যাগটি কেড়ে নেয় তারা। ব্যাগে টাকা ছাড়াও ছিল দরকারি কাগজপত্র। দিনকয়েক আগের সেই ঘটনার এখনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
এটা বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়। শনিবার স্কুলে যাচ্ছিলেন কল্যাণীর শিক্ষিকা, বি ৪ এলাকার বাসিন্দা শুভ্রা রায়। টোটোতে যাওয়ার সময় তাঁর কাছ থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তাঁর অভিযোগ, কিছু বোঝার আগেই বাইক নিয়ে মিলিয়ে যায় ওরা। ব্যাগে জরুরি কাগ়পত্র ছাড়াও নগদ টাকা ও মোবাইল ছিল।
শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছিনতাই এখন কল্যাণীর রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুষ্কৃতীদের প্রায় সকলেরই বাহন মোটরবাইক। এক সময় এই শহরে চুরি-ছিনতাই ছিল রোজ দিনের ঘটনা। মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকায় স্বস্তিতে ছিল শহর। কিন্তু গত ২০ দিনে অন্তত ১৬টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ফের শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ক্ষুব্ধ শহরের বাসিন্দাদের প্রশ্ন পুলিশ তা হলে কী করছে? ছিনতাই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও পুলিশকে কটাক্ষ করা হচ্ছে। জয়ন্তীদেবীর ঘটনার পরেই, তাঁর ছেলে নিলয় নাথ ফেসবুকে পুরো ঘটনা তুলে দিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন, কল্যাণী কি আর বসবাসের জন্য নিরাপদ? লোকজন আর কাকে ভরসা করবে?
মঙ্গলবার দুপুরে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের কর্মী, কল্যাণী বি-৩ এলাকার বাসিন্দা স্নেহাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাঙ্ক থেকে ১৪ হাজার টাকা তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। একই কায়দায় তাঁর হাতের ব্যাগ ছিনতাই হয়। একই অভিজ্ঞতা কল্যাণী কলেজের পড়ুয়া জুয়েল মণ্ডলেরও।
দিন আটেক আগে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তিনি সাইকেলে ফিরছিলেন। একটি টাটা সুমো গাড়ি তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে নেমে একজন তাঁর মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। এর এক জন মাথায় রিভলভারের বাট দিয়ে মেরে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। কাছে থাকা হাজার পাঁচেক টাকা তারা কেড়ে নেয়। কল্যাণীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।’’