খাট-বিছানা-তোশক সবই ওঠে নৌকায়

Advertisement

আব্দুল হাসিম

রানিতলা  শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

এভাবেই চলে খেয়া পারাপার। —নিজস্ব চিত্র

দিনকয়েক আগেই ঘটে গিয়েছে ভৈরবের দুর্ঘটনা। তারপরও চোখ খুলছে না কারও। জেলার বেশ কিছু ফেরিঘাটে অনিয়ম অব্যাহত। ক্ষমতার বাইরে গিয়ে নৌকা বোঝাই করে যাত্রী তোলা চলছেই। সঙ্গে যথেচ্ছভাবে তোলা হচ্ছে ভারী ভারী মোটরবাইক, সাইকেল, এমনকি খড়বোঝাই করা ভ্যান। ভৈরব নদীর ওপর হরিরামপুর ঘাটের চিত্রটা অনেকটাই একইরকম। রানিতলা থানার অন্তর্গত সরলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিরামপুর ঘাটে সারাদিনে কয়েক হাজার মানুষ পারাপার করেন। একদিকে হরিরামপুর, অন্যদিকে গোপীনাথপুর— এই দুই জায়গার মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই হরিরামপুর ফেরিঘাট। তাই আকারে ছোট হলেও হরিরামপুর ফেরিঘাটের স্থানিক গুরুত্ব অপরিসীম। প্রায় ২৪ ঘণ্টাই এই ফেরিঘাট দিয়ে পারাপার চলে। সীমান্তবর্তী এলাকা যেমন লোচনপুর, দাঁড়াকাটি, শেখপাড়া এলাকার মানুষ লালবাগ যেতে সাধারণত হরিরামপুর ঘাট দিয়েই যাতায়াত করেন। তা না হলে সীমান্ত এলাকার মানুষকে চুনাখালি ঘুরে দ্বিগুণ রাস্তা পেরিয়ে লালবাগে যেতে হয়। এতে সময় এবং অর্থ দুই-ই বেশি খরচ হয়।

Advertisement

এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাটের ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ হয় না বলে যাত্রীরা অভিযোগ তুলছেন। এক নিত্যযাত্রী বললেন, ‘‘ কয়েকদিন আগে ভৈরবে নৌকা ডুবে গেল। তিন জন মারাও গেলেন। তারপর দেখছি মাঝিরা নৌকা বোঝাই করে লোক তুলছেন। ছোট নৌকায় বাড়তি মালপত্র তোলা হচ্ছে।’’ অভিযোগের যে সারবত্তা রয়েছে, ওই ঘাটে গিয়েই তা বোঝা গেল। এক ব্যক্তি নৌকায় বাড়ির আসবাবপত্র তুলছিলেন। তা দেখে নৌকায় ওঠা কয়েকজন যাত্রী মৃদু প্রতিবাদ করলেন। মাঝই অবশ্য এমন ভাব করলেন যেন কিছুই তাঁর কানে পৌঁছয়নি। যাত্রীদের অভিযোগ, অনেক সময় বাড়তি পারানির লোভে একদল মাঝি নৌকায় অতিরিক্ত বোঝা তোলেন। বিয়ের মরসুমে উপহারের খাট, বিছানা, তোষক নিয়েও অনেকে নৌকায় ওঠেন। দুপুরে ওই ঘাট দিয়ে যাতায়াত একটু কম থাকে। বাকি সময় এই ঘাট দিয়ে লোক পারাপারের বিরাম নেই। অতিরিক্ত যাত্রী তোলার ঘটনা সেই সময়েই বেশি ঘটে। যদিও মাঝিদের দাবি, তাঁরা বাড়তি যাত্রী কিংবা মালপত্র নৌকায় তুলতে চান না। তবে অনেক সময় যাত্রীদের জোরাজুরিতে এমনটা তাঁরা করতে বাধ্য হন। পাশাপাশি, সাইরুল শেখ নামে এক মাঝি বললেন, ‘‘ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে যাত্রী আমরা তুলি না। অভিযোগ ঠিক নয়। আমার নৌকা ২০০ টন ওজন বইতে পারে। তবে অত ওজন তুলি না। খুব বেশি হলে ৫০-৬০ জন যাত্রী নিই।’’

এ নিয়ে রানিতলা থানার ওসি রবি মালাকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কিছুদিন আগে আমরা ফেরিঘাটে গিয়ে মাইক নিয়ে সকলকে সচেতন করতে গিয়েছিলাম। নৌকায় অতিরিক্ত মানুষ ও গাড়ি তোলা যাবে না। কথা না শুনলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন