অমরের মা। নিজস্ব চিত্র
হুমকি পাওয়া সত্ত্বেও বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসা করাতে গ্রামে ফিরেছিলেন। খেসারত দিতে হল প্রাণ দিয়ে। বৃদ্ধা মায়ের সামনে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হল হাঁসখালি থানা এলাকার ঘাঘরাচরের বাসিন্দা অমর বিশ্বাসকে (৪৫)।
ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক প্রকাশ মণ্ডল অমরেরই প্রতিবেশী। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতের মেয়ে পুতুলের সঙ্গে প্রকাশের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বছর দুয়েক আগে তারা পালিয়েও যায়। প্রায় দেড় মাস পর তারা ফিরে আসে। এরপর মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন পেশায় লছিমন চালক অমর। পরে পুতুলকে উত্তরপ্রদেশের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন তিনি। বিয়ের পর পুতুল এখন উত্তরপ্রদেশেই থাকেন। তবে পুতুলের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি প্রকাশ। এ জন্য প্রায়ই সে অমরকে হুমকি দিত বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। ভয়ে কিছুদিন যাবৎ গ্রাম থেকে বেশ কিছুটা দূরে হাঁসখালি শহরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন অমর ও তাঁর স্ত্রী।
তারপর থেকে ঘাঘরাচরের বাড়িতে একাই থাকতেন অমরের মা মিনতি বিশ্বাস। এমনিতেই অসুস্থ ছিলেন বৃদ্ধা। এর উপর বৃহস্পতিবার পড়ে গিয়ে আঘাত পান তিনি। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে আর দূরে থাকতে পারেননি অমর। ওই দিন বিকেলে বাড়িতে ফিরে মাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তিনি। শুক্রবার সকালে মায়ের জন্য খাবার ও ওষুধ নিয়ে আসেন। ঘরের সামনে দাঁড়াতেই পিছন থেকে এসে প্রকাশ ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপায় বলে অভিযোগ। এরপর পালিয়ে যায় সে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অমরের।
নিহতের মামা তরুণ বিশ্বাস বলেন, “প্রকাশ আমার ভাগ্নেকে খুনের হুমকি দিত। সেই ভয়েই অমর হাঁসখালিতে ঘর ভাড়া করে ছিল। তার পরেও যে প্রকাশ ভাগ্নেকে খুন করবে, ভাবতে পারিনি।” ঘটনার পর এলাকাবাসী প্রকাশের বাড়িতে ভাঙচুর করে। বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান প্রকাশের পরিবারের লোকেরা।