তখনও চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র
প্রধান শিক্ষক দিনের পর দিন স্কুলে আসেন না।। বন্ধ মিড-ডে মিলও। একপ্রকার অচলাবস্থা চলছে স্কুলে। তারই প্রতিবাদে পথে নামলেন গ্রামবাসীরা। শনিবার সকাল থেকে ডোমকলের শিবনগর হাইস্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভে সামিল হন অভিভাবক, গ্রামবাসীরা।
অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনারুল ইসলাম দুর্নীতিতে জড়িত। অনেকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলেছেন। কিন্তু তিনি তা দিতে পারেননি। তাঁদের ভয়ে এখন তিনি স্কুলে আসছেন না। ফলে স্কুলে একপ্রকার অচলাবস্থা শুরু হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুলে যান পুলিশ ও ডোমকলের যুগ্ম বিডিও মনিরুল ইসলাম। কিন্তু বিক্ষোভ ওঠেনি।
স্কুলের শিক্ষকদের একাংশও প্রধান শিক্ষকের আচরণে বিরক্ত। তিনি নিয়মিত না আসায় নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। যদিও প্রধান শিক্ষক আনারুল ইসলাম গোটা ঘটনায় চক্রান্তের গন্ধ পেয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, স্কুলের এক কর্মী ঘটনাটি ঘটিয়েছে। মিথ্যা কথা বলে তিনি গ্রামের মানুষকে উস্কে দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি কেন দিনের পর দিন স্কুলে যাচ্ছেন না তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এই প্রথম নয়, এর আগেও ওই প্রধান শিক্ষককে ঘিরে অনেক অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমনকী সপ্তাহ খানেক আগেও গ্রামের মানুষ স্কুলে গিয়ে প্রতিবাদ করে এই ঘটনার।
অভিভাবক মিজালুন হকের কথায়, ‘‘প্রধান শিক্ষক অনেক গুণী মানুষ। তাই প্রায়ই স্কুলে গণ্ডগোল হয়। তবে প্রায় মাস খানেক থেকে তিনি স্কুলে আসা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে মিড-ডে মিল বন্ধ হয়ে পড়েছে। পঠন পাঠনেও ক্ষতি হচ্ছে।’’ বাধ্য হয়ে তাঁরা প্রতিবাদ করতে স্কুল গেটে তালা ঝুলিয়েছেন বলে তিনি জানান।
তবে এ দিনই শেষ নয়, সোমবারও একই ভাবে বিক্ষোভ চলবে বলে তাঁরা জানান। আরও এক অভিভাবক সফিকুল ইসলাম জানান, জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসছেন না। তাংর দাবি, ‘‘এলাকার অনেকের কাছে তিনি চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলেছেন। তারা স্কুলে প্রায় আসছেন, সেই খবর পেয়ে উনি আর স্কুলমুখো হচ্ছেন না।’’ যদিও প্রধান শিক্ষক আনারুল ইসলাম বলেন, ‘‘অভিযোগ ঠিক নয়। জানুয়ারিতে আমি স্কুলে গিয়েছি। তবে স্কুলের তরফে আমার বিরুদ্ধে একটা লিখিত অভিযোগ শিক্ষা দফতরে পড়ার পর থেকে অভিমানে আর স্কুলে যাইনি।’’
স্কুলের শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘উনি স্কুলের কোনও বিষয় নিয়ে কারও সঙ্গে পরামর্শ করেন না। কোনও হিসেবও কাউকে দেন না। প্রশাসন এই বিষয়টিতে নজর না দিলে স্কুলে আরও অচলাবস্থা তৈরি হবে।’’
যুগ্ম বিডিও মনিরুল ইসলাম গ্রামবাসীদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এবং সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু গ্রামের মানুষের এক দাবি, প্রধান শিক্ষককে স্কুলে আসতে হবে।