মনোনয়নের চতুর্থ দিন

দিনভর কথা বলল গুলি, বোমা, লাঠি

 হরিহরপাড়া থেকে শান্তিপুর, লালবাগ থেকে হাঁসকালি, লাঠি-বাঁশের টক্কর থেকে বোমা-গুলির লড়াই স্পষ্ট করে দিল আগামী এক মাসে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে কী হতে চলেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩৭
Share:

হরিহরপাড়ায় লাঠি দিয়ে পেটানো হল কংগ্রেস নেতাকে। নিজস্ব চিত্র

শুরুটা হয়েছিল বুধবার বিকেলে, বৃহস্পতির দুপুরে তা মাত্রা ছাড়াল।

Advertisement

কখনও নদিয়া কখনও বা পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদ— কোথাও মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিজেপি সমর্থদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল তৃণমূল কোথাও বা পাল্টা গুলি ছুড়ল কংগ্রেস।

হরিহরপাড়া থেকে শান্তিপুর, লালবাগ থেকে হাঁসকালি, লাঠি-বাঁশের টক্কর থেকে বোমা-গুলির লড়াই স্পষ্ট করে দিল আগামী এক মাসে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে কী হতে চলেছে।

Advertisement

এ দিন, সকাল থেকেই হাঁসখালি ও শান্তিপুর ব্লক অফিসের সামনে কার্যত দাপিয়ে বেড়ালো তৃণমূলের বাহিনী। বিজেপি হোক বা সিপিএম, কংগ্রেস যেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছে সেই বাহিনীর শিকার হতে হয়েছে তাদের। কেউ মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি তো কেউ ছুটে পালিয়ে বাঁচালেন প্রাণ।

বুধবার সকালেই শুরু করেছিল চাপড়ায়, সিপিএস ও কংগ্রেস পার্টি অফিসে ঢুকে মারধর, ভাঙচুর ও হুমকি দিয়ে এসেছিল শাসক দলের কর্মীরা। শান্তিপুরে ফুলিয়ায় একই ভাবে ব্লক অফিসের সামনে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল তারা। এ দিন আরও জঙ্গি চেহারায় ফিরে এল তারা।

সামান্যতম প্রতিরোধ করলেই বিরোদীদের কপালে জুটেছে লাঠি ও রড পেটা। এদের মধ্যে চার জন সিপিএম কর্মী বেধড়ক মার খেয়ে জখম হয়েছে। সিপিএমের দাবি, রামনগর এলাকার বাসিন্দা উদয়শঙ্কর বিশ্বাসকে গুরুতর জখম অবস্থায় বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

এ দিন সকালে অটোয় চেপে তারকনগর থেকে হাঁসখালিত ব্লক অফিসে আসছিলেন বিজেপির অঞ্জনা সরকার। হাঁসখালি থেকেই তাকে মারধর করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

পিছিয়ে থাকেনি শান্তিপুরও। সকাল থেকে ফুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ব্লক অফিস পর্যন্ত কার্যত দাপিয়ে বেড়িয়েছে তৃণমূলের বাহিনী। জাতীয় সড়কের উপর থেকে শুরু করে রেলগেট রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকা এই বাহিনী কার্যত তল্লাশি চালিয়েছে গাড়িতে। মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে কোথায় যাওয়া হচ্ছে বা কোন দলের সদস্য। মাধ্যমে বেঁচে থাকতে চাইছে।”

এ দিন হরিহরপাড়ায় গন্ডগোলের জের ছড়ডায় অন্যত্রও। কান্দি এবং খড়গ্রামে দু পক্ষের হাতাহাতি বড় চেহারা নেয়। এ দিন পারুলিয়া অঞ্চল থেকে বিজেপি তাদের প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করার জন্য ব্লক অফিসে যাচ্ছিল। সেই সময় ব্লক অফিসের সামনে থাকা তৃণমূলের কর্মীরা বিজেপির প্রার্থী ও কর্মীদের বাধা দেয়। শুরু হয় গন্ডগোল। অভিযোগ সেই সময় তৃণমূলের লোকজন কংগ্রেসের কার্যালয় লক্ষ করে ইট ছোড়ে। পাল্টা উত্তর দেয় কংগ্রেসও।

গন্ডগোল হয়েছে লালবাগেও। একই চেহারায় না হলেও হাতাহাতি, লাঠি নিয়ে পরস্পরকে তেড়ে যাওয়ার ঘটনা রয়েছে রানিনগর-সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে। শাসকদলের লোকজন বিরোধীদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে, অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপিও। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলছেন, “সব পক্ষই আমাদের কাছে অভিযোগ করছে। অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন