Teacher

শিক্ষকের ঘাটতি মেটাতে ফোরের পড়ুয়ারাই স্যর!

স্কুল সুত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যায় কম বলে মাস্টারমশাই ও দিদিমণিরা এত ছাত্রছাত্রীকে ক্লাস করাতে পারছেন না। অগত্যা নিয়মিত চতুর্থ শ্রেণির কয়েক জন ছাত্রছাত্রীকে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় শ্রেণিতে ক্লাস করাতে পাঠানো হচ্ছে!

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক

তেহট্ট শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০৫
Share:

শিক্ষক কম থাকায় পড়ুয়ারাই নিচ্ছে ক্লাস। তেহট্ট। নিজস্ব চিত্র

শিক্ষকের ঘাটতি মেটাতে তাঁদের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন একটু উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা! গত প্রায় দেড় মাস ধরে এমন ভাবেই চলছে তেহট্টের শ্রীরামপুর স্পেশাল ক্যাডার প্রাইমারি বিদ্যালয়ে।

Advertisement

স্কুল সুত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যায় কম বলে মাস্টারমশাই ও দিদিমণিরা এত ছাত্রছাত্রীকে ক্লাস করাতে পারছেন না। অগত্যা নিয়মিত চতুর্থ শ্রেণির কয়েক জন ছাত্রছাত্রীকে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় শ্রেণিতে ক্লাস করাতে পাঠানো হচ্ছে! প্রশ্ন উঠছে, চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া মানে তো মাত্র নয়-দশ বছর বয়স। তাদের পক্ষে কি পড়ানো সম্ভব? শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, কী আর করা, ছাত্রছাত্রীদের অন্তত কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। উঁচু ক্লাসের পড়াশোনায় ভাল কয়েক জন ছাত্রছাত্রী তাদের সাধ্যমতো যতটুকু পড়ায় সেটাই লাভ। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মৌসুমী হালদার ও জুম্মাতুন খাতুন জানিয়েছে, মাস খানেক ধরে মাঝে মাঝেই নীচু ক্লাসের ভাইবোনদের লেখাপড়া শেখাতে হয়। তাদের ভালই লাগে।

কানাইনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এই প্রত্যন্ত গ্রামে ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য ১৯৫৫ সালে স্কুলটি তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে পড়ুয়া রয়েছে ১৬৯ জন। কিন্তু মাত্র ৬ জন স্থায়ী শিক্ষক ও ১ জন পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন। গত জানুয়ারি মাসে এক জন ও ফেব্রুয়ারি মাসে দু’ জন স্থায়ী শিক্ষক অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। ১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও দু’জন ভোটের কাজ করছেন। স্কুলে রয়েছেন শুধু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন হালদার ও পার্শ্বশিক্ষক রুহু আমিন সেখ।

Advertisement

তপন হালদার বলেন, “ এ ভাবে কি সম্ভব? ১৬৯ জনের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১০০ জন পড়ুয়া আসেই। অন্তত ৬ জন শিক্ষক প্রয়োজন। ২ জনের পক্ষে কখনই পারা যায় না। ক্লাস হয় না। ছোট বাচ্চারা হৈ চৈ করে, নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। কিছু শেখে না। কত দিকে নজর রাখব? খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ক্লাস ফোরের কয়েক জনকে ক্লাস টুয়ে ক্লাস করতে পাঠানো হয়।’’ অভিভাবক সামাদ মণ্ডল ও সুমন্ত হালদার বলেন, “সমস্যার কথা আমাদের জানিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষকমশাই। দিন কয়েক আগে এই ব্যাপারে অভিভাবকদের নিয়ে একটি বৈঠকও হয়। ৬ জনের জায়গায় এখন এক জন শিক্ষক ও এক জন পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন। বাধ্য হয়েই উঁচু ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীদের দিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন।’’ তেহট্ট ২ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বাপ্পাদিত্য সাহা জানান, ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সমস্যার কথা জানিয়েছেন। পুজোর ছুটির পরে অবশ্যই শিক্ষকের সমস্যার সমাধান করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন