মশারি টাঙিয়ে পথনাটিকা। শনিবার নাজিরপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
সরকারি প্রচার সব কানে পৌঁছয়নি। এ বার ডেঙ্গি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে পথে নামল তেহট্টের নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচশো ছাত্রছাত্রী। সঙ্গে ছিলেন শিক্ষকেরা। সামিল হয়েছঠিল পুলিশও। শনিবার বিভিন্ন পাড়ায় প্রচার চালানো হয়। নানা রকম প্ল্যাকার্ড আর মশারি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় করা হয় পথনাটিকা। শিক্ষক প্রদীপ্ত দাস বলেন, “আমাদের এলাকাতেও কয়েক জন ডেঙ্গি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। নাজিরপুরে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও সচেতনতা জরুরি।’’
সরকারি নির্দেশি অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে একটি দিন স্কুলের আশপাশে কোথাও ভাঙা পাত্র, পুরনো টায়ার-টিউব বা ডাবের খোলায় জল জমে থাকলে তা ফেলে দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এ দিন ছাত্রছাত্রীদেরও আর্জি ছিল, স্কুল বা বাড়ির আশপাশের জমা জল পরিষ্কার করা এবং সব সময়ে মশারি ব্যবহার করা।
স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সাজিদ বিশ্বাস ও একাদশ শ্রেণির রমা মণ্ডল বলে, “আমরা এখন সন্ধ্যায় মশারির ভিতর বসে পড়াশোনা করছি। কিন্তু পাড়ার অনেকেই ব্যাপারটা জানেন না। তাই আমাদের পথনাটিকায় মশারি ব্যবহার করা বা মশা তাড়ানো কয়েল জ্বালানোর কথা বলা হয়েছে।”
এ দিনই সাতসকালে ডাক্তার, বদ্যি, মশা মারার কামান নিয়ে বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় কিষান ঘোষ লেনে যান পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য। ওই এলাকায় মশা মারার ওসুধ স্প্রে করার পাশাপাশি, ব্লিচিং পাউডার ও চুন ছেটানো হয়। শিবির করে শতাধিক মানুষের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষাও করা হয়। বিতরণ করা হয় ওষুধ। ওই শিবির থেকে ১২-১৪ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে।
পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘শুধু আজই নয়। কয়েক দিন ধরেই শহরের কাশিমবাজার, ইন্দ্রপ্রস্থ, জয়চাঁদ খাগড়া, কল্পনা মোড়, জজ কোর্ট মোড়-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় একই ভাবে মশা নিধন এবং সচেতনতা অভিযান চলছে। আরও কয়েক দিন তা লাগাতার চলবে।’’ তবে ডেঙ্গি নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেছেন। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, বহরমপুর শহরে গত ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৭৮ জন ডেঙ্গি রোগী পাওয়া গিয়েছে। যদিও মৃত্যুর খবর নেই। পুরসভার এই উদ্যোগের পাশাপাশিই বহরমপুর টাউন কংগ্রেসের তরফেও কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ও চুন ছেটানোর কাজ চলছে।