চিয়ার্স: তখনও আত্মবিশ্বাসী। রবিবার নবদ্বীপে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
সুনসান বাজার
মাঝ দুপুরেই ফুরিয়ে গেল একটা জলজ্যান্ত রবিবার। দুপুর আড়াইটের মধ্যে কাজ সেরে ফেলতে লড়ে গেল নবদ্বীপ থেকে নওদা, বহরমপুর থেকে বেতাই। অতএব, দুপুরের পর থেকে বাজার সুনসান। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ‘‘ব্যবসা তো সারা বছরই চলে। কিন্তু ম্যাচের একটা মুহূর্তও মিস করা চলবে না।!’’
জয় হো
নবদ্বীপে জায়েন্ট স্ক্রিন আর বহরমপুরে পতাকার চাহিদা দেখে থ পোড় খাওয়া ব্যবসায়ী। বেলডাঙার মণ্ডপতলার মোড়ে দিনভর সাউন্ডবক্সে বেজেছে— জয় হো! রাস্তার একধারে মঞ্চ বেঁধে ভারতীয় ক্রিকেট দলের পোস্টার ফুলে মালায় সাজানো। নীচে ঢাউস এলইডি টিভি। রাস্তায় পাতা চেয়ার। দুপুরের রোদ মিইয়ে যেতেই মুহূর্তে বোঝাই সেই চেয়ার। মঞ্চের পিছনে রাখা বাজি আর আবির।
ওভাল-নবদ্বীপ
এমন দিনে তিনি মাঠে যেতে পারেননি। কিন্তু ওভালের মাঠকেই যদি টেনে আনা যায় নবদ্বীপে নিজের দশ ফুট বাই দশ ফুটের ঘরে? যেমন ভাবা তেমন কাজ! সেই ২০০০ সালে ইডেনে শোয়েব আখতারের পাকিস্তানের টেস্টম্যাচ দিয়ে খেলা দেখা শুরু অশোক চক্রবর্তীর। ইডেন তাঁকে চেনে ‘বডি পেন্টিং’ এর জন্য। রবিবার নিজের ঘরে বসেই গলা ফাটালেন অশোকবাবু। হ্যাঁ, এ দিনও তিনি ‘বডি পেন্টিং’ করিয়েছিলেন।
রোদের জন্য
একটা সময় মনিরুল শেখের চায়ের দোকানে সর্বক্ষণ টিভি চলত। অথচ ডোমকলের কলাবাড়িয়া মোড়ে সেই দোকানের বোকা বাক্সটি প্রায় মাস দু’য়েক থেকে চুপ। কিন্তু এ দিন মনিরুলের মনখারাপ উধাও। পাড়ার জনাকয়েক যুবক চাঁদা তুলে কিনে দিয়েছেন সেট টপ বক্স। খেলার সঙ্গে চা না হলে জমে?
অকাল পিকনিক
গরমের কারণে কর্মবিরতির জন্য নিন্দুকেরা তাঁদের সম্পর্কে অনেক কিছুই বলে। কিন্তু রবিবার রোদ-গরম সব উপেক্ষা করেই কৃষ্ণনগর বার অ্যাসোসিয়েশনের ঘরে ভিড় করলেন সদস্যেরা। ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ, সঙ্গে অকাল পিকনিক। মেনু পমফ্রেট, দিশি কাতলা ভাজা, মুরগির মাংস আর ভাত।
পুনশ্চ
সন্ধ্যা নামতেই নিভতে শুরু করে আবেগের আঁচ। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে হতাশা। কেউ টিভি বন্ধ করে দিয়েছেন। পিকনিক ফেলে বিষণ্ণ মনে বাড়ি ফিরেছেন কেউ। বাজি ভুলে বেজার মুখে বাজির বিড়ি বন্ধুকে তুলে দিতে দিতে কেউ আবার বলেছেন, ‘‘যাক গে, খেলায় তো হার-জিত থাকেই। পরের বার ইঞ্চিতে-ইঞ্চিতে বুঝে নেব!’’