শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত।
সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধীদের ব্রাত্য রাখার রেওয়াজ নতুন নয়। পালাবদলের পরে, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ এমন ঘটনার বিরাম নেই।
তা বলে সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দলের জেলা পর্যবেক্ষক? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন, মুর্শিদাবাদের বাম-কংগ্রেস জেলা নেতারা।
অনুষ্ঠান ধুলিয়ানে, স্থানীয় পুরসভার উদ্যোগে শনিবার উদ্বোধন হল একটি জল প্রকল্পের। সেখানে যথারীতি আমন্ত্রণ পাননি স্থানীয় বিরোধী কাউন্সিলর অথচ সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দলের মুর্শিদাবাদ জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। তবে, পর্যবেক্ষক হিসেবে নন, আমন্ত্রণপত্রে তাঁর পরিচয় পরিবহণমন্ত্রী। এ দিনের অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অবশ্য আসেননি।
বিরোধীদের প্রশ্ন, অনুষ্ঠানটি নিছকই পানীয় জলের সেখানে পরিবহণ দফতরকে জড়িয়ে দেওয়ার মানে কী? ওই পুরসভার এক মাত্র কংগ্রেস কাউন্সিলার তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান সফর আলি তাই বলছেন, ‘‘সরকারি অনুষ্ঠান আর দলীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে এখন আর ফারাক কোথায়, তাই তো ওই অনুষ্ঠান শেষে ‘তৃণমূল জিন্দাবাদ’ স্লোগান উঠল!’’
তবে, অনুষ্ঠানে উপস্থিত পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “শুভেন্দু দলের পর্যবেক্ষক হলেও রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী। তাই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অসুস্থ বলে আসতে পারেননি।”
এ দিনের সরকারি অনুষ্ঠানে মহম্মদ সোহরাব, সৌমিক হোসেন, রাজীব হোসেন-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতারা মঞ্চে ছিলেন। একেবারে দলীয় অনুষ্ঠানের ধাঁচে দলের জয়ধ্বনিও দিলেন। এমনকী, আমন্ত্রণপত্রে এবং শিলা ফলকে নাম রইল শুভেন্দু অধিকারীর। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক তোয়াব আলির প্রশ্ন, ‘‘এতটা নির্লজ্জ হয়ে পড়েছে শাসক দল যে, সরকারি বিজ্ঞাপনে চার তৃণমূল বিধায়কের নামও ছাপা হয়েছে। একটুও চক্ষুলজ্জা নেই!’’
ধুলিয়ান পুরসভায় ৯ জন কংগ্রেস কাউন্সিলারের মধ্যে আট জনই দল বদলে এখন তৃণমূলে। সবেধন সফর আলি এক মাত্র বিরোধী কাউন্সিলার।
তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাদের কাট-আউটের ছড়াছড়ি। ওখানে নিমন্ত্রণ পেলেও যেতাম না। সরকারি টাকায় দলের অনুষ্ঠানে গিয়ে কি বলতাম বলুন তো!’’ কেন এমন হল?
পুরপ্রধান সুবল সাহা বলছেন, “আমি গত কয়েক দিন কলকাতায়। পুর কর্মীদের উপর ভার দিয়ে এসেছিলাম। জানি না কেন এমন হল। তবে, উনি (শুভেন্দু) দলীয় নেতা হলেও ধুলিয়ান পুরসভায় উন্নয়ন ও জল প্রকল্প রূপায়ণে ওঁর অবদান ভোলার নয়।’’