বিধানসভা নির্বাচনের পরে দেড় বছরের মধ্যেই ডোমকলের অধিকাংশ পঞ্চায়েত ডিগবাজি খেয়ে আশ্রয় খুঁজেছে শাসক দলে।
পঞ্চায়েত সমিতিও গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। এই অবস্থায় ডোমকল পুরসভা নির্বাচনের মাস খানেকের দূরত্বে এসে তৃণমূলের দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী রবিবার এসে জানিয়ে গেলেন, ডোমকল এ বার ‘২১-০’ চাই তাঁদের।
গত নির্বাচনে মরিয়া হয়ে জোট যখন ধাক্কা দিচ্ছে শাসক দলকে তখনও পায়ের তলায় মাটি খুঁজছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সৌমিক হোসেন। শেষ পর্যন্ত আনিসুর রহমানের (সিপিএম) কাছে সমর্পণ করে দ্বিতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল সৌমিককে। এ বার অবশ্য জোট সঙ্ঘবদ্ধ। গত ভোটে রাজ্যের অন্যত্র বাম কংগ্রেস জোট হলেও ডোমকলে লড়াই হয়েছিল ত্রিমুখি। তার পর থেকে কংগ্রেস এবং বামেরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়লেও শাসক দলের অগ্রগতি থামেনি। এ বার তাই তাদের রুখতে বাস্তবিকই বাম-কংগ্রেসে জোট হয়েছে। বেগতিক বুঝে এ বার তাই জোটের প্রশ্নে কোনও ফাঁক রাখছে না তারা। বহরমপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানান, ডোমকলের পুর নির্বাচনে শাসক দলের বিরুদ্ধে সিপিএমের সঙ্গে জোট করেই লড়বে কংগ্রেস। আগামী ১৮ এপ্রিল দল বেঁধে মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন কংগ্রেস প্রার্থীরা।
তবে ২১-০-র প্রশ্নে তৃণমূল কতটা সফল হবে সে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে দলের অন্দরেই। কারণ, বিজেপির উত্থান। সীমান্ত এলাকায় গত কয়েক মাসে তা নিয়ে চর্চাও শুরু হয়েছে বলে দলের অন্দরের খবর। এ দিন শুভেন্দুও সে প্রসঙ্গ বেশি ঘাঁটাননি। তিনিও লড়াই সীমাবদ্ধ রেখেছেন জো়ট-তৃণমূলের মধ্যেই। সৌমিককে পাশে দাঁড় করিয়ে তাঁর হারের প্রসঙ্গ টেনে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ডোমকলের মানুষ আর ‘ভুল করবেন না।’ সেই সঙ্গে প্রকাশ করেছেন ২১টিল ওয়ার্ডে শাসক দলের প্রার্থীদের নামও।
দিন কয়েক আগে ডোমকলে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী এসে বলেছিলেন, ‘‘এই জেলায় আমাদের মাত্র চার জন বিধায়ক। পরে অনেকে এসেছেন, কিন্তু ভোটে জিতে আসেননি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সেই ‘অভিমান’ মনে করিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এই জেলায় কংগ্রেস মানুষকে প্রতারিত করেছে, সিপিএম বঞ্চিত করেছে। তার পরেও কেন ওদের ভোট দেবেন?’’ তবে কাঁথি বিধানসভা উপনির্বাচন প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘কাঁথিতে সিপিএমের আগে ভোট ছিল ৪২ হাজার। সেখান থেকে প্রায় ৩৭ হাজার ভোট চলে গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। ফলে এখানে যদি আপনারা সিপিএম কংগ্রেস জোটকে ভোট দেন তাহলে পরোক্ষে বিজেপিকেই সমর্থন করা হবে।’’