প্রহৃত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ

‘ত্রাণ’ তহবিলে চাঁদা না দেওয়ায় এক শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ জমা পড়ল মুর্শিদাবাদ থানায়। যদিও পুলিশ রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি। অভিযোগ, ভগবানগোলার সুলতানপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য শনিবার চাঁদা সংগ্রহ করছিল মুর্শিদাবাদ থানার ডাঙাপড়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সাজু মণ্ডল ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গেরা। সেই সময়ে বেল্লাল শেখ নামে ওই শিক্ষক তাদের দাবিমত চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করে তারা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ০৩:৩৫
Share:

‘ত্রাণ’ তহবিলে চাঁদা না দেওয়ায় এক শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ জমা পড়ল মুর্শিদাবাদ থানায়। যদিও পুলিশ রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি।

Advertisement

অভিযোগ, ভগবানগোলার সুলতানপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য শনিবার চাঁদা সংগ্রহ করছিল মুর্শিদাবাদ থানার ডাঙাপড়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সাজু মণ্ডল ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গেরা। সেই সময়ে বেল্লাল শেখ নামে ওই শিক্ষক তাদের দাবিমত চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করে তারা। পরে আহত অবস্থায় তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি মুর্শিদাবাদ থানায় সাজু মণ্ডল ও তার দলবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তার পরেই রবিবার পাল্টা বেল্লাল শেখ-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ থানায় মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

সাজু মণ্ডল জানান, শনিবারের ঘটনার জেরে এ দিন সকালে আবু কালাম শেখ নামে এক জনকে মারধর করা হয়। তাকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই যুবকের পরিবার বেল্লাল শেখের নেতৃত্বে তার ছেলে রুসু শেখ, তার এক ভাই আজিজুল হক এবং রুহিল আমিন শেখ, আওয়াল শেখ ও কুবাদ শেখ নামে মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সাজুর কথায়, ‘‘এ দিন সকালে আমার এক দিদি রাস্তা দিয়ে আসার সময়ে তাকে অপমান ও অপদস্থ করে ওরা। এমনকী তার শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে। যদিও সে ব্যাপারে থানায় এখনও লিখিত কিছু জানাইনি।’’

Advertisement

বেল্লাল শেখ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘কালকের ওই ঘটনার সময়ে প্রাণভয়ে আমার ছেলে বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তার পরে থেকে আতঙ্কে রয়েছে সকলেই। এ দিন কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের কাছে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, তাঁর কাছে ১০ টাকা চাঁদা চাওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি দেননি বলেও মিথ্যা কথা বলেছে। কারণ ১০ টাকা চাঁদা না দেওয়ার তো কিছু ছিল না। ওরা ১০ হাজার টাকা চাঁদার দাবিতে জুলুমবাজি করে।

এদিকে শনিবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে জানান—জেলা যুব সভাপতি অশেষ ঘোষের নির্দেশে ওই এলাকায় চাঁদা তোলা হচ্ছিল। এ দিন জেলা সভাপতির ওই মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন জেলা যুব সভাপতি অশেষ ঘোষ। তিনি জানান, আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তিনি ভগবানগোলার সুলতানপুর গ্রামে যাই। তাঁর সঙ্গে জেলা যুব সংগঠনের অনেকেই ছিলেন। ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে গ্রামের অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে যান। তাই ওই পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার জন্য এক লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই মত এখন সকলেই নিজেদের মত করে চাঁদা সংগ্রহ করছেন। কিন্তু তিনি কাউকে কোনও চাঁদা তোলার নির্দেশ দেননি বলে জানিয়েছেন। চাঁদা তোলার ক্ষেত্রে জুলুমবাজি করার কথাও বলা হয়নি।

তৃণমূলের ডাঙাপাড়া অঞ্চল সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি সাজু মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলা যুব সভাপতি অশেষ ঘোষ আমাকে চাঁদা তোলার কোনও নির্দেশ দেননি। আমাদের গ্রামের পক্ষ থেকে ওই সুলতানপুরের মানুষের কাছে অর্থ সাহায্য পৌঁছে দেব বলেই ওই চাঁদা তোলা হচ্ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন