থালা আনিসনি কেন, দাঁড়িয়ে থাক রোদ্দুরে

ভুলটা মাঝে মধ্যেই হয়, কাঁচা বয়স, সব সময় তাড়াহুড়োয় থাকে। মিডডে মিলের থালা আনার কথা মনে রাখার সময় কোথায়!তবে, সে দোষ, বকাঝকার উপর দিয়েই উড়ে যেত এত দিন। দিন কয়েক আগে, ধানতলা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক একটু তেতেই নির্দেশ দিয়েছিলেন— যারা থালা আনেনি, তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হবে ঠা ঠা রোদ্দুরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪০
Share:

ভুলটা মাঝে মধ্যেই হয়, কাঁচা বয়স, সব সময় তাড়াহুড়োয় থাকে। মিডডে মিলের থালা আনার কথা মনে রাখার সময় কোথায়!

Advertisement

তবে, সে দোষ, বকাঝকার উপর দিয়েই উড়ে যেত এত দিন। দিন কয়েক আগে, ধানতলা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক একটু তেতেই নির্দেশ দিয়েছিলেন— যারা থালা আনেনি, তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হবে ঠা ঠা রোদ্দুরে।

চৈত্রের সেই খোলা রোদ্দুরে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল প্রবীর বিশ্বাস (নাম পরিবর্তিত)। তার পরিবারের অভিযোগ, শুধু কড়া ‘শাস্তি’ই নয়, ছেলেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দিয়ে স্কুল থেকে ‘তাড়িয়ে’ দেওয়ার ফরমানও জারি করেছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরঞ্জন মজুমদার।

Advertisement

সে কথা অবশ্য মানছেন না সুরঞ্জনবাবু, ‘‘রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে রাখার ব্যাপারটা নিছক গল্প। তবে ওই ছাত্রের মা নিজেই ছেলেকে অন্য স্কুলে ভর্তির জন্য টিসি চেয়েছিলেন, দিয়েও দিয়েছি।’’

পাল্টা অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রের মা। তিনি জানান, বাড়ির কাছে স্কুল, সেখান থেকে ছেলেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার কোনও ইচ্ছাই তাঁর ছিল না। বলছেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক মুখের উপর জানিয়ে দিলেন, ছেলেকে অন্য কোথাও ভর্তি করুন।’’ তবে, ঘটনাটি শুনে বেজায় চটেছেন নদিয়া জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের সভাপতি রমাপ্রসাদ রায়। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।

ওই ছাত্রের মা জানান, মনিডডে মিলের জন্য ছেলের ব্যাগে প্রতি দিনই থালাটা ঠেসেঠুসে ভরে দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সে কাজটাই ভুলে গিয়েছিলেন। মিডডে মিলের পাত পড়তেই ব্যাগে হাত ঢুকিয়ে প্রবীর দেখে থালা নেই। নির্দেশ আসে— রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে থাকার।

ওই মহিলা বলেন, ‘‘খেতে না হয় না দিল, তা বলে ওই রোদে দাঁড় করিয়ে রাখে কেউ? যদি কিছু হয়ে যেত!’’ আরও অন্তত জনা তিনেক সহপাঠীর একই দসা হয়েছে বলে খবর পান ওই মহিলা। তার পরেই স্কুলে দেকা করতে গিয়েছিলেন সুরঞ্জনবাবুর সঙ্গে। সেখানেই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কিঞ্চিৎ তর্কাতর্কির পরে তাঁকে টিসি ধরিয়ে দেন বলে ওই মহিলার অভিযোগ।

তবে, জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ঠিক-ভুল ঘটনা যাই হোক না কেন, বাড়ির লোকের লিখিত আবেদন ছাড়া টিসি দেওয়া যায় না। ওই ছাত্রের মা মৌখিক ভাবে টিসি চাইতে তা দিলেন কী করে সুরঞ্জনবাবু?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন