গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় জানিয়েছিলেন, রাতে এগারোটার মধ্যে ফিরে আসবেন। তারপরে কেটে গিয়েছে সাত সাতটা দিন!
সপ্তাহ ঘুরলেও নাচ শেখাতে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি নবদ্বীপের নৃত্য শিক্ষক ইন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়! নবদ্বীপ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন পরিজনেরা। বেশ কিছু জায়গায় খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। কোনও হদিশই মেলেনি বছর সাতচল্লিশের ইন্দ্রনাথবাবুর।
দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে নবদ্বীপ এবং সংলগ্ন এলাকায় নাচের শিক্ষক হিসাবে পরিচিত মুখ ইন্দ্রনাথবাবু। ‘নটরাজ নৃত্যকলা কেন্দ্র’ নামে একটি নাচের স্কুলও রয়েছে তাঁর। জানা গিয়েছে, গত ১ অক্টোবর বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নবদ্বীপ তেঘড়িপাড়ার বাড়ি থেকে অন্য দিনের মতো নাচের ক্লাস নিতে বেরিয়েছিলেন তিনি। মেজদা সোমনাথকে জানিয়েছিলেন রাত এগারোটার মধ্যে ফিরে আসবেন। ইতিমধ্যে চলে এসেছে আর একটা বৃহস্পতিবার। ঘরে ফেরেননি তিনি।
ইন্দ্রনাথবাবুর ছোড়দা চন্দ্রনাথবাবু জানান, ঘটনার দিন বাড়িতে তাঁরা তিন ভাই ছিলেন। মহিলাদের অনুপস্থিতিতে ওই দিন দুপুরে রান্না করেন ইন্দ্রনাথবাবু। তারপরে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে টিউশানিতে বের হন। চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “বের হওয়ার আগে মেজদাকে জানায় সন্ধ্যায় প্রথমে নবদ্বীপ শহরের দু’জায়গায় টিউশানি সেরে যাবে পার্শ্ববর্তী শ্রীরামপুরে। রাতে এগারোটার মধ্যে ফিরে আসবে। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার কিছু পরে আমরা খুঁজতে শুরু করি।’’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথমে নবদ্বীপের ফুলবাগানে নাচ শেখাতে গিয়েছিলেন ইন্দ্রনাথবাবু। সাতটার পরে চলে যান তিনি। কিন্তু, এরপরে ব্যাদড়াপাড়ার যে বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে তিনি যাননি!
ইন্দ্রনাথবাবু স্টেশন পার হয়ে শ্রীরামপুরে নাচের ক্লাসে যেতেন। প্রতিদিন স্টেশন দিয়ে যাতায়াতের সুবাদে কর্তব্যরত জিআরপি-র কাছে চেনা মুখ ছিলেন তিনি। জিআরপি সূত্রে খবর, সে দিনও ইন্দ্রনাথবাবুকে সাড়ে সাতটা আটটা নাগাদ তাঁকে ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, শ্রীরামপুরে ওই দিন যাননি তিনি। খোঁজ না পেয়ে পরদিন, ২ অক্টোবর নবদ্বীপ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিজনেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এখনও ওই শিক্ষকের খোঁজ মেলেনি। এলাকায় চট্টোপাধ্যায় পরিবার নির্বাবাদী বলেই পরিচিত। এমন পরিবারের সদস্য হঠাৎ কেন উধাও হয়ে গেল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশও।