নাবালিকা বিয়ে বানচাল শিক্ষকের

তবে নিজের বিয়ের ব্যাপারে সে নিয়ম প্রয়োগের ব্যাপারে তেমন উৎসাহ দেখাননি। নিজেই এক নাবালিকাকে বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেছিলেন তিনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৬
Share:

তিনি নিজে শিক্ষক। সরকারি চাকরি করেন। ছাত্রছাত্রীদের নীতিবোধের শিক্ষা দেন। আবার নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন শিবিরে নানা সময়ে মতামতও দিয়ে আসেন।

Advertisement

তবে নিজের বিয়ের ব্যাপারে সে নিয়ম প্রয়োগের ব্যাপারে তেমন উৎসাহ দেখাননি। নিজেই এক নাবালিকাকে বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেছিলেন তিনি বলে অভিযোগ।

কাজটা যে ঠিক করছেন না , তা অবশ্য ঠারেঠোরে বুঝেছিলেন, আর তাই বিয়ের ব্যাপারটা আদ্যন্ত গোপনই রেখেছিলেন। বিয়ের জন্য বেছে নিয়েছিলেন বহরমপুরের এক মন্দির। তবে, চাপা থাকেনি সে খবর, শেষ পর্যন্ত স্থানীয় কন্যাশ্রী যোদ্ধারা খবর পেয়েই প্রশাসনের কানে তুলেছিল খবরটা। আর তা শুনেই ওই শিক্ষকের বাড়িতে ছুটে এসেছিলেন স্থানীয় বিডিও।

Advertisement

হরিহরপাড়ার ডালন্টনপুরের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক উত্তর-চব্বিশ পরগনার বারাসাতের বাসিন্দা মৃণালকান্তি মণ্ডলকে চেপে ধরতেই তিনি জানিয়ে ছিলেন, উদ্যোগটা তাঁর নিজের নয়। পরিবারের অন্যদের। এ হেন কীর্তিতে প্রশাসনিক কর্তারাও হতভম্ব। সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত মানুষের যদি এটুকু নৈতিকতা অবশিষ্ট না-থাকে তা হলে সচেতনতা কর্মসূচি চলবে কী করে? হরিহরপাড়া ব্লকের যুগ্ম বিডিও উদয় পালিত শনিবার বলেন, ‘‘ডোমকলের ভগীরথপুরের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে বিয়েটা একরকম পাকাই করে ফেলেছিলেন ওই শিক্ষক। খবরটা দিয়েছিল কন্যাশ্রী যোদ্ধারা। গিয়ে দেখি খবরটা ঠিক।’’ বিডিও জানান, ওই নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। বিয়ের ব্যাপারে সেই পরিবারটিকেও সতর্ক করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘‘উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।’’ প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রেও জানা গিয়েছে, প্রয়োজনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৃণালবাবু বিয়ের কথা কার্যত স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পাত্রীপক্ষের তরফ থেকে সম্বন্ধ আসে। আমি দেখতে যাই। মেয়েটিকে পছন্দও হয়। বিয়ের তারিখ ঠিক হয় ৫ ফেব্রুয়ারf। কিন্তু শেষ মুহূর্তে জানতে পারি, মেয়ে নাবালিকা। তখন পিছিয়ে আসি। এখন আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ তা হলে, বিয়ের কার্ড ছাপানো হল কেন? আমতা আমতা করে তাঁর জবাব, ‘‘কী করি বলুন তো, বাড়ির চাপ তো!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন