অস্থায়ী চাকরি গ্যারাজ দুর্ঘটনায় মৃতদের স্ত্রীকে

নির্মীয়মাণ গ্যারাজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত দুই শ্রমিকের স্ত্রীকে অস্থায়ী চাকরি দিল কৃষ্ণনগর পুরসভা। গত মঙ্গলবার তাঁদের কৃষ্ণনগর পুরসভায় অস্থায়ী কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর মৃতের পরিবারের কাউকে চাকরির দাবিতে প্রবল বিক্ষোভ হয়েছিল। পরুর কর্তৃপক্ষ তখন চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৯
Share:

ভেঙে পড়া সেই গ্যারাজ। — ফাইল চিত্র

নির্মীয়মাণ গ্যারাজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত দুই শ্রমিকের স্ত্রীকে অস্থায়ী চাকরি দিল কৃষ্ণনগর পুরসভা। গত মঙ্গলবার তাঁদের কৃষ্ণনগর পুরসভায় অস্থায়ী কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর মৃতের পরিবারের কাউকে চাকরির দাবিতে প্রবল বিক্ষোভ হয়েছিল। পরুর কর্তৃপক্ষ তখন চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

Advertisement

মৃত দুই শ্রমিকের স্ত্রীকে কৃষ্ণনগর পুরসভায় পিওনের কাজ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বালার্ক মজুমদার গ্রেফতার হলেও অন্যতম অভিযুক্ত, ঠিকাদার খলিল মল্লিককে এখনও পুলিশ খুঁজে বের করতে পারেনি। তা নিয়ে মৃত এবং আহতদের পরিবারের মধ্যে চরম ক্ষোভ রয়েছে।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে খলিল মল্লিক পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাঁর খোঁজ চলছে। শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা হবে।

Advertisement

মৃত নির্মাণ শ্রমিক সহদেব বিশ্বাসের স্ত্রী সুশীলা বিশ্বাস জানান, পুরসভা তাঁকে একটি অস্থায়ী কাজ দিয়েছে। কিন্তু, রাজ্য সরকার যে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে বলেছিল, তা এখনও পাননি তিনি। সুশীলাদেবীর বলেন, ‘‘চাকরি পেলেও, মানুষটাকে তো আর ফিরে পাব না। যাদের জন্য এই ঘটনা ঘটল, তাদের শাস্তি চাই।’’

ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “ঘটনার পরের দিনই মৃত দুই শ্রমিকের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ট্রেজারির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়েছে। টাকা না পাওয়ার কথা নয়। আমি সোমবার অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো।”

উল্লেখ্য, কৃষ্ণনগরে জেলখানা রোডে জলসরবরাহ প্রকল্পে পুরসভার একটি গ্যারাজ তৈরির কাজ চলছিল। গত ৫ অক্টোবর ওই গ্যারাজের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। সে দিন বিকেলে আচমকা অর্ধসমাপ্ত ছাদ ভেঙে পড়ে। স্থানীয় শিমুলতলার গৌতম বিশ্বাস এবং শম্ভুনগরের সহদেব বিশ্বাস নামে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন বেশ কয়েকজন।

ঘটনার পর থেকেই মৃত এবং আহতদের পরিবারের লোকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। মৃতদের দেহ ময়নাতদন্ত হলেও তা নিতে অস্বীকার করে বাড়ির তাঁদের বাড়ির লোকেরা। তখন পুরসভার পুরপ্রধান অসীমকুমার সাহা মৃত দুই শ্রমিকের স্ত্রীকে পুরসভায় অস্থায়ী চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার পুরপ্রধান অসীমকুমার সাহা জানিয়েছেন, মৃত দুই শ্রমিক তাঁদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ছিলেন। তাই, তাঁদের পরিবারের পাশে দাড়াতে এই চাকরির ব্যবস্থা করা হল।

এরই মধ্যে দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের মধ্যে চাপান উতোর শুরু হয়েছে। অসীমবাবুর দাবি, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র এবং ঠিকাদারের গাফিলতিতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ঠিকাদারকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি পুলিশের কাছে।’’

পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসিত সাহা অবশ্য এই ঘটনার দায় পুরসভার উপরেই চাপিয়েছেন। তিনি ঘটনার দুদিন পরে কোতোয়ালি থানায় এ বিষয়ে পুর কর্তৃপক্ষ্যের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও দায়ের করেছেন।

অসীমবাবুর অভিযোগ, সেন্টারিংয়ের বাঁশের খুটি এবং কাঠের পাটাতন ছিল নড়বড়ে। তা দেখেই ঢালাই করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদার আমার নির্দেশ অমান্য করে ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন