দর বাড়িয়ে স্বমহিমায় ভাগীরথী

আমুলের মোকাবিলা করতে এই ১ সেপ্টেম্বর থেকেই দর বাড়িয়েছে ভাগীরথী।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

ইদের সময়ে কয়েক দিন নেমে গিয়েছিল দুধের সংগ্রহ। তার উপরে আমুল সংস্থা বেশি দর দিয়ে দুধ কেনায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ‘দ্য ভাগীরথী কো-অপারেটিভ মিল্ক প্রডিউসার ইউনিয়ন লিমিটেড’-এর কর্মীরা।

Advertisement

কিন্তু ইতিমধ্যে দুধের দর কেজিতে দু’টাকা করে বাড়িয়েছে ভাগীরথীও। ফলে, দুধের জোগানও প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। মাঝখান থেকে, দু’টি বড় সংস্থা বেশি দাম দেওয়ায় কপাল খুলে গিয়েছে গোপালকদের।

ভাগীরথী-র আওতায় মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় চারশো দুগ্ধ সমবায় সমিতি আছে। সংস্থা সূত্রের খবর, গত বছর অগস্টে প্রতি দিন গড়ে ৪০ হাজার লিটার করে দুধ সংগ্রহ হত। এ বছর অগস্টে গড়ে ৪৩ হাজার লিটার করে দুধ সংগ্রহ হয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ইদ থাকায় জোগান ক’দিন ধাক্কা খেয়েছিল। প্রতি বছরই ইদের কয়েক দিন জোগান কমে। দুধ সংগ্রহের পরিমাণ গড়ে ১০ হাজার লিটারের নীচে নেমে যায়।

Advertisement

আমুলের মোকাবিলা করতে এই ১ সেপ্টেম্বর থেকেই দর বাড়িয়েছে ভাগীরথী। গোপালকদের উৎসাহ ভাতাও বাড়ানো হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সংস্থার দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ফের প্রতি দিন গড়ে ৪০ হাজার লিটারের কাছাকাছি দুধ সংগ্রহ হচ্ছে। দুধ, পনির, ঘি-সহ অন্য সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে। ভাগীরথীর প্যাকেটজাত দুধ প্রতি দিন গড়ে ২০ হাজার লিটার করে বিক্রি হয়। ঘি ও পনির-সহ দুগ্ধজাত খাবারের জন্যও দৈনিক ১৫ হাজার লিটার দুধ লাগে।

স্বর্ণময়ী এলাকার ব্যবসায়ী সুদীপ মণ্ডল বলেন, “ভাগীরথীর জিনিস আগের মতোই পাচ্ছি।” চুঁয়াপুরের কমলকান্তি দাসও বলেন, “ভাগীরথীর দুধ, ঘি, পনির সবই পরিমাণ মতো পাচ্ছি। তবে শুনছি, আমুল চড়া দামে দুধ কেনার ফলে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে।” ভাগীরথী দুগ্ধ উৎপাদক সমবায় সমিতির বিশেষ অফিসার জয়দীপ রায়ের দাবি, “আমাদের দুগ্ধজাত পণ্যর চাহিদা বাড়ছে। দুধের প্রয়োজন বাড়ছে। কলকাতার পাশাপাশি শিলিগুড়ি ও দার্জিলিংয়ের বাজারও আমরা ধরতে চাইছি। কিন্তু আমুল চড়া দামে দুধ কিনতে শুরু করায় পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছি না।’’ দুধের অভাবে ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত আটকে যাওয়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন সংস্থার কর্মী ও বিভিন্ন সমবায়ের সদস্যেরা।

জয়দীপের অভিযোগ, মুর্শিদাবাদে তাঁদের আওতাধীন সমবায় সমিতির সদস্যদের থেকেও বেশি দামে দুধ কিনছে আমুল। তাঁর দাবি, ‘‘ওরা এটা করতে পারে না। রাজ্যে রেজিস্ট্রার অব কো-অপারেটিভের কাছে রেজিস্ট্রেশন নেই আমুলের। ওরা অন্যায় ভাবে বিভিন্ন এলাকায় দুগ্ধ সমবায় সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে দুধ কিনছে।” আমুলের কান্দি কেন্দ্রের ইনচার্জ সুমন্ত মিশ্রের দাবি, “রাজ্যে মুর্শিদাবাদ-সহ পাঁচ জেলায় ২৯৪টি দুগ্ধ সমবায় সমিতি রয়েছে। সেখান থেকেই দুধ কিনছি।” সমিতিগুলির রেজিস্ট্রেশনে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে, বলে তিনি দাবি করেন। জয়দীপ জানান, আমুলের বিষয়টি তাঁরা রাজ্যকে জানান। এখনই ভাগীরথীর উৎপাদন বা বাজার মার খাওয়ার আশঙ্কা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন