বাড়ির একতলার ছাদে খড়ের গাদা। আর সেই গাদায় লুকিয়ে রাখা ছিল বোমা। বাড়ির এক শিশু বন্ধুদের সঙ্গে হুটোপুটি করতে গিয়ে খড়ের গাদায় হুমড়ি খেয়ে পড়তেই বোমা ফেটে রক্তারক্তি। প্রাণে বাঁচলেও আঙুল, পায়ের চেটো উড়ে তারা এখন প্রতিবন্ধী। বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলা আর তার জেরে প্রাণহানি নিদেন পক্ষে অঙ্গহানির ঘটনা নদিয়া এবং তার পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদে প্রায় নিত্যকার ঘটনায় দাঁড়িয়েছে। তবে তা নিয়ে পুলিশের কিংবা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির হেলদোল? নাহ, নেই তেমন। পরস্পরের বিরুদ্ধে চাপানউতোর আর দোষস্খালনের প্রবণতা ছাড়া প্রাপ্তির ঝুলি শূন্যই।
তাই, কখনও মুর্শিদাবাদের ডোমকল তো কখনও নদিয়ার সাহেবপাড়া, খড়ের গাদা থেকে বাড়ির লাগোয়া ঝোপঝাড়, পরিত্যক্ত ঘপবাড়ি কিংবা বাড়ির গোয়াল— ফেটেই চলেছে বোমা।
দিন কয়েক আগে, সেই বোমা এসে ঠাঁই নিয়েছিল সটান বাড়ির চালের হাঁড়িতে। আর চাল বের করতে গিয়ে হাতই উড়ে গিয়েছে বাড়ির এক মহিলার।
বোমা কাহিনির সঙ্গে এখন জায়গা করে নিয়েছে খাটে পাতা তোষকের নিচে খড়ের চালায়, চালের বস্তায় বিভিন্ন মাপের অস্ত্র। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য বলছেন, “বেআইনি অস্ত্র জেলায় ঢুকলে সোর্স মারফত আমাদের কাছে খবর আসে।’’ তা হলে এত ঘটনা ঘটার পরে পুলিশ নড়েচড়ে বসে কেন? তার কোনও উত্তর অবশ্য মেলেনি।
পুলিশের দাবি, এখন অস্ত্র আসছে, বিহার কিংবা মালদহ সীমান্ত পেরিয়ে ঝাড়খন্ড থেকে। অস্ত্র কারবারিরা ফরাক্কা শমসেরগঞ্জ হয়ে সেই সব অস্ত্র নিয়ে আসছে জেলায়। মূলত বিহারের মুঙ্গেরের তৈরি অস্ত্র নদিয়া-মুর্শিদাবাদে ঢুকছে। আর সেই অস্ত্র ছড়িয়ে যাচ্ছে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায়। সূত্রের খবর বাইরে থেকে যে সব অস্ত্র ঢোকে তার সামান্য অংশই পুলিশের জালে ধরা পড়ে। বাকি অংশ বেআইনি অস্ত্র কারবারি থেকে দূষ্কৃতীদের হাতে চলে যায়।