ফরাক্কা ব্যারাজে কাজে যোগ দিয়ে শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীর হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক সহকারী বাস্তুকার।
বছর ঘোরার আগেই, সোমবার, ফরাক্কার এনটিপিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে একই ‘দাদাগিরি’র সামনে পড়লেন বহিরাগত কর্মীরা। এবং অভিযোগের তির এ বারও তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের দিকে।
শুধু মারধর করাই নয়, ঠিকাদারি সংস্থার দুই কর্তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আটকে রেখে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠল তৃণমূলের ফরাক্কা ব্লক সভাপতি ও তাঁর জনা কয়েক সঙ্গীর বিরুদ্ধে। ঘণ্টা দুয়েক পর সিআইএসএফ জওয়ানেরা ফরাক্কার থানার পুলিশ নিয়ে ওই তৃণমূল কার্যালয়ে গিয়ে উদ্ধার করেন তাঁদের।
ইউনিট বন্ধ রেখে ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সংস্কারের কাজ হয়। এনটিপিসির প্রথম ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে আসা ওই ঠিকাদার সংস্থাটি ২০ মার্চ সে কাজ শুরু করেছিল। অভিযোগ, প্রথম থেকেই, তৃণমূলের লোকজন তাদের শাসিয়ে যাচ্ছিল। দাবি একটাই, বহিরাগত ঠিকাদার সংস্থা নয়, ইউনিট সংস্কারের কাজে নিতে হবে স্থানীয় শ্রমিক। দিন কয়েক আগে, সংস্থার দুই কর্মী বাঙ্গারু শিব গনেশ এবং জগদীশ বিশ্বাসকে ফিল্ড হস্টেলের গেট থেকে তুলেও নিয়ে গিয়েছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও হুমকি থামেনি।
এ দিন সকালে একই ভাবেই হস্টেল থেকে এনটিপিসি প্লান্টে যাওয়ার পথে ঠিকাদারি সংস্থার সাইট ইন চার্জ শ্রীকৃষ্ণ মিশ্র এবং সিনিয়র সুপারভাইজর জগদীশ বিশ্বাসের পথ আটকায় দাঁড়ায় তিনটি বাইক।
শ্রীকৃষ্ণ বলেন, “জোর করে আমাদের টেনে তোলে বাইকে। তার পর দলীয় অফিসে নিয়ে গিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে।’’
ঘণ্টা দেড়েক পরে ফাঁক পেয়ে এনটিপিসি-র সিআইএসএফ ক্যাম্পে ফোন করে জানান তাঁরা। তার পরেই স্থানীয় পুলিশ এসে ওই দু’জনকে উদ্ধার করে। পরে, থানায় তৃণমূলের ফরাক্কা ব্লক সভাপতি এজারত সেখ এবং তার সঙ্গী আকমল সেখের নামে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। রাতে, আকমল শেখ এবং আসরফ শেখ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এজারত অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ওই ঠিকাদারি সংস্থার কাছে আমাদের দাবি ছিল, স্থানীয় বেকার ছেলেদের কয়েকজনকে নিয়োগ করার। তা বলে মারধর, তুলে নিয়ে য়াওয়া— এ সব কিচ্ছু হয়নি।’’
তবে, দলীয় নেতাদের এমন ‘কাণ্ডকারখানা’ বরদাস্ত করতে রাজি নন দলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন। তিনি বলেন, “নিয়োগের দাবি হয়ত করা যেত তা বলে গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না। দলের তরফে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’