TMC

দলীয় কর্মসূচিতে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ব্রাত্য

স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যখন দলের সবাইকে একসঙ্গে চলার নির্দেশ দিচ্ছেন, তখন ব্লক সভাপতিকে উপেক্ষা করা কি নেত্রীর নির্দেশকেই অমান্য করা নয়?

Advertisement

সুস্মিত হালদার ও সন্দীপ পাল

কৃষ্ণনগর ও কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

লড়াইটা ছিল লোকসভা ভোটের আগে থেকে। বিধানসভা ভোটের আগেও তা অক্ষুণ্ণ রাখলেন স্বয়ং জেলা সভাপতি। দলীয় কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হল না নাকাশিপাড়ার ব্লক সভাপতিকে। যা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই শুরু হয়েছে প্রবল গুঞ্জন।

Advertisement

প্রশ্ন উঠছে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যখন দলের সবাইকে একসঙ্গে চলার নির্দেশ দিচ্ছেন, তখন ব্লক সভাপতিকে উপেক্ষা করা কি নেত্রীর নির্দেশকেই অমান্য করা নয়? মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে দলীয় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্লকের সভাপতি ও বিধায়কদের দেখা গেলেও নাকাশিপাড়ার অশোক দত্তকে দেখা যায়নি। অশোকবাবুর কথায়, “আমন্ত্রণ পাইনি। তাই যাইনি।”

লোকসভা ভোটের অনেক আগে থেকেই বর্তমান জেলা সভাপতি সঙ্গে ১৯৯৮ সাল থেকে টানা ব্লক সভাপতির পদে থাকা অশোক দত্তের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছিল। দলীয় সূত্রের খবর, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, লোকসভা ভোটে নাকাশিপাড়ার নেতৃত্বকে না-জানিয়েই ওই ব্লকে একাধিক প্রচার কর্মসূচিতে অংশ নেন সেই সময়ের প্রার্থী, এখন সাংসদ তথা জেলা সভাপতি।

Advertisement

শুধু অশোক দত্তই নয়, লোকসভা ভোটের পর তিনি কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে বিধায়ক কল্লোল খাঁর সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ হয় বলে অভিযোগ। শুধু প্রকাশ্যে মুখ খোলাই নয়, রাজ্য নেতৃ্ত্বের কাছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা তৎকালীন কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগও জানিয়েছিলেন কল্লোলবাবু। এরই মধ্যে সাংসদ যে নতুন কমিটি তৈরি করেছিলেন সেখানে নাকাশিপাড়া ব্লক সভাপতি পদ থেকে অশোক দত্তকে সরিয়ে কনিষ্ক চট্টোপাধ্যয়কে বসান। যা নিয়ে দলের ভিতরে প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। পুরনো নেতারা একযোগে এর প্রতিবাদ করেন। শেষ পর্যন্ত সেই কমিটি বাতিল করে দেওয়া হয় বলে কল্লোলবাবুদের দাবি। কল্লোল খাঁ বলেন, “নেত্রীর নির্দেশে সেই কমিটি বাতিল হয়েছিল। তাই অশোক দত্তই এখন ব্লক সভাপতি।”

কিন্তু সমস্যা ও বিবাদ এখানে মেটেনি। দলেরই অনেকেরই মত, তাঁর তৈরি কমিটি বাতিল হয়ে যাওয়াকে সহজে মানতে পারেননি সাংসদ। অনেকেই মনে করছেন, ব্লক সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও অশোক দত্তকে এ ভাবে দলীয় কর্মসূচি থেকে দূরে রাখার পিছনে সাংসদের সেই পুরনো ক্ষোভ কাজ করেছে। নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, “অনুষ্ঠান চলাকালীনই আমি সাংসদকে জানিয়ে দিয়েছিলাম যে, অশোক দত্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ পাননি।” কেন এমন হল? কল্লোলবাবু বলেন, “সেটা আমার জানা নেই।” এই বিষয়ে সাংসদ তথা জেলা সভাপতিকে বারবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি। ফলে তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

মঙ্গলবার ওই অনুষ্ঠানে নাকাশাপাড়ির কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি অনিল বাড়ুই তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। পাশাপাশি চাপড়া, কালীগঞ্জ, তেহট্ট, কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের বেশ কিছু সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেস নেতাকর্মী তৃণমূলে যোগ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন