কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের জনসভায়।
সকাল থেকেই ঝিরঝির বৃষ্টি। তার মধ্যেই টানা তিন ঘণ্টা ধরে সভা হল গত ২১ জুন। একে-একে এসে বক্তৃতা করে গেলেন পাঁচ মন্ত্রী।
শহর-গাঁকে স্বস্তি দিয়ে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ফিরেছে অবশেষে। কিন্তু স্বস্তি ফেরেনি তৃণমূলে। পঞ্চায়েত ভোটে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র এলাকার একাধিক ব্লকে ভাল ফল করেছে বিজেপি। বেশ কিছু জায়গায় তারা শাসকদলের ঘাড়ের উপরে নিঃশ্বাস ফেলছে। এই এলাকা থেকে জেলা পরিষদের দু’টি আসনে জয়ীও হয়েছে বিজেপি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রকে ‘ইতিবাচক’ ধরে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যে কারণে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ২১ জুন জেলার তিন বর্ষীয়ান নেতাকে ডেকে ধমকও দিয়েছেন। সে দিনই কৃষ্ণনগরে বড় সভা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
কৃষ্ণনগরে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে তিন মাথার মোড়ে দুপুর ২টো থেকে শুরু হয় সভা। ঘটনাচক্রে, গত ২০ জুন সেখানেই সভা করে গিয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া মুকুল রায়। এ দিন সভার শুরুটা করেন জেলার মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, যুব সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাসেরা।
এর পরেই মঞ্চে উঠে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অভিকারী বলেন, “ব্লক স্তরে মিটিং-মিছিল করতে হবে।’’ শুভেন্দুর নেতৃত্বেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত থেকে মুর্শিদাবাদ ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। তিনি বলেন, ‘‘কৃষ্ণনগর, চাপড়া, তেহট্ট, নাকাশিপাড়া— যেখানে যখন লড়াই করবেন, আমাকে ডাকবেন। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে আপনাদের পাশে থেকে লড়াই করব।”
পরে একে-একে আসেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরাসরি কারও নাম না করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘গুজরাত থেকে একটা মোটা লোক এসে বলছে, এনকাউন্টার করবে। সে সত্যি এনকাউন্টার করেছে বলে ৭০ দিন জেলে ছিল!” পার্থের হুঁশিয়ারি, “ওরা আমাদের কর্মীদের হুমকি দেবে আর আমরা আঙুল চুষব, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই।”
মঞ্চের নীচে দাঁড়িয়ে কিছু সাধারণ কর্মীকে বলতে শোনা যায়, “মুকুল রায়ের সভায় ক’টা লোক এনে বড়-বড় কথা বলছিল। এখন দেখে যাক, এই বৃষ্টিতেও সভা কাকে বলে!”