জড়াল তৃণমূল নেতার নামও

তাণ্ডবের সময়েই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, সহপাঠিনীর মৃত্যুতে শোকার্ত ছাত্রেরা নয়, রাস্তায় দাপাচ্ছে লাঠি-রড হাতে স্থানীয় যুবকেরা। কে তাদের ইন্ধন জোগাল, সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছিল।

Advertisement

বিমান হাজরা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৭ ০০:৪৯
Share:

ধৃত: আদালতে তোলার আগে। শনিবার জঙ্গিপুরে। নিজস্ব চিত্র

তাণ্ডবের সময়েই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, সহপাঠিনীর মৃত্যুতে শোকার্ত ছাত্রেরা নয়, রাস্তায় দাপাচ্ছে লাঠি-রড হাতে স্থানীয় যুবকেরা। কে তাদের ইন্ধন জোগাল, সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছিল।

Advertisement

পুলিশের ধারণা, মৃতদেহ আটকে রেখে জাতীয় সড়ক অবরোধ, বাস-লরি পোড়ানো ও পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে পরিকল্পিত ভাবেই। এবং এর পিছনে এক তৃণমূল নেতার ইন্ধন ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ১০-১২ জন ইলিয়াস শেখ নামে ওই নেতার অনুগামী বলে পরিচিত। তবে শনিবার পর্যন্ত পুলিশ তাঁকে ধরেনি।

ফরাক্কা ব্লক তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ইলিয়াসের বাড়ি নিউ ফরাক্কা মোড়ে ঘটনাস্থলের কাছেই। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে সভা করার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানায়, গত ১১ মার্চ ওই মোড়ের কাছেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় এক জনের। পরের দিন ইলিয়াস দলবল নিয়ে পথ অবরোধ করে সভা করেন। পুলিশ-প্রশাসনকে দায়ী করে উত্তেজক বক্তৃতাও করেছিলেন তিনি।

Advertisement

তৃণমূলের ফরাক্কা ব্লক সভাপতি এজারত আলি বলেন, “ইলিয়াস শেখ আমাকেও ওই অবরোধ কর্মসূচিতে ডেকেছিলেন। আমি যাইনি। বারবার তাঁকে অবরোধ ও সভা করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু উনি কোনও কথা শোনেননি। সভায় উনি যে বক্তব্য রাখেন, সে সবও বলা ঠিক হয়নি।’’

শুক্রবারের গোলমালে অবশ্য ইলিয়াসকে দেখা যায়নি। উস্কানির অভিযোগও মানতে চাননি তিনি। ইলিয়াসের দাবি, “আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম। আমার লোকজনও এই ঘটনায় জড়িত নয়।’’ তবে ১১ মার্চের সভার কথা তিনি মেনে নিয়েছেন।

ইলিয়াসের বক্তব্য, ‘‘নিউ ফরাক্কা মোড় দীর্ঘদিন অকেজো হয়ে রয়েছে আলো। ওই সভায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাজকর্ম নিয়ে আমি কিছু অভিযোগ তুলেছিলাম। ” দুর্ঘটনার পরে কেন পুলিশকে নিশানা করা হল?

স্থানীয় সূত্রের খবর, নিউ ফরাক্কা মোড় ও তার আশপাশে কিছু হোটেল ও ঝুপড়ি রয়েছে। এক সময়ে এই সব হোটেল ও ঝুপড়ি ছিল দেহব্যবসা ও অবৈধ মদের আড্ডাখানা। ফরাক্কা থানার পুলিশ মাঝেমধ্যেই হানা দিয়ে সে সব অনেকটাই বন্ধ করেছে। তাই পুলিশের উপরে রাগ রয়েছে ওই সব কারবারে জড়িত লোকজনের। তাতে ইন্ধন জোগানোর ফলেই গোলমাল বড় চেহারা নিয়েছে। তবে তৃণমূলের সকলে যে দলের কিছু নেতা-কর্মীর এই ভূমিকা সমর্থন করছেন, এমনটা নয়। এজারতের মতে, “রাজ্যের শাসক দল হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সেটা পালিত না হলে কী হতে পারে, তার জ্বলন্ত নজির শুক্রবারের ঘটনা।’’ এ দিন বহরমপুরে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেনকে সব বলে এসেছেন বলেও তিনি জানান। মান্নান বলেন, ‘‘দলের নেতাদের কাছে খবর নিয়েছি। ইলিয়াস উস্কানিমূলক বক্তৃতা করেছিলেন। ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন