Humayun Kabir And Suvendu Adhikari

হুমায়ুনকে গীতা উপহার বিডিও-র, ‘সনাতনী’ শুভেন্দুর প্রশ্নের জবাব দিতে তৈরি হচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক

যদিও গীতা পড়তে গিয়ে বার বার ঠোক্কর খাচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলছেন, ‘‘এক একটি শব্দের উচ্চারণ অত্যন্ত কঠিন। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, দাঁত ভেঙে যাবে। তবু নিজেই পড়ব।’’

Advertisement

প্রণয় ঘোষ

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ২০:১২
Share:

গীতা হাতে হুমায়ুন কবীর। —নিজস্ব চিত্র।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের আক্রমণে মাঝেমধ্যেই মেজাজ হারাচ্ছেন এলাকার বিধায়ক। সেটা লক্ষ করে হুমায়ুন কবীরকে গীতা উপহার দিয়েছিলেন ভরতপুর-২ ব্লকের প্রাক্তন বিডিও আশিস মণ্ডল। এত দিন উপহারটি ব্যক্তিগত কার্যালয়ের ড্রয়ারে রেখে দিয়েছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক। হঠাৎ সেই গীতা বার করেছেন ড্রয়ার থেকে। কারণ, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আক্রমণের জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন। যা নিয়ে বিজেপির খোঁচা, অবশেষে শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে ভরতপুরের হুমায়ুনের।

Advertisement

হুমায়ুন ও শুভেন্দুর ‘লড়াই’ বেশ পুরনো। কখনও শুভেন্দু হুঙ্কার দিয়েছেন, ‘হুমায়ুনের মতো লোকেদের’ উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করবেন। কখনও নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ককে হুমায়ুন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে পা দিলে বোঝাবেন কত ধানে কত চাল। দিন কয়েক আগে বিরোধী দলনেতার একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হুমায়ুনের কটাক্ষে শোরগোল পড়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। তৃণমূল শো-কজ়ের চিঠি দেয় হুমায়ুনকে। শেষমেশ মাফ চেয়ে নিয়েছেন বিধায়ক। কথা দিয়েছেন, কথাবার্তা নিয়ে সতর্ক হবেন। এ হেন হুমায়ুন হঠাৎ গীতা-চর্চা শুরু করেছেন।

বিধায়কের দাবি, ধর্মকে হাতিয়ার করে রাজনীতির আঙিনায় আগেও তাঁকে প্রতিপক্ষের কেউ কেউ আক্রমণ করেছেন। তিনি মেজাজ হারাতেন। ২০২২ সালেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। তখন ভরতপুর-২ ব্লকের বিডিও ছিলেন আশিস মণ্ডল। একদিন কিছু কাজে বিধায়ক গিয়েছিলেন বিডিও-র কাছে। সে দিন তাঁকে একটি গীতা উপহার দেন আশিস। একই সঙ্গে বিধায়ককে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন, ক্রোধ সংবরণ করতে। এই বইতে তারই হদিস পাবেন। তা ছাড়া সনাতন ধর্ম, দর্শন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন বিধায়ক। হুমায়ুনের কথায়, ‘‘কিছু দিন পড়াশোনা করছিলাম। তার পর নানা ব্যস্ততায় আর গীতা পড়া হয়নি। আবার শুরু করলাম।’’ তাঁর দাবি, শুভেন্দু সনাতন ধর্ম নিয়ে এমন নানা কথা বলে থাকেন, যার যুতসই জবাব খুঁজে পান না। তাই নিজেকে প্রস্তুত করছেন গীতা পড়ে। হুমায়ুন বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু কথায় কথায় গীতার কথা বলেন। তাই আমিও দেখতে চাই, গীতায় কী আছে।’’

Advertisement

যদিও গীতা পড়তে গিয়ে বার বার ঠোক্কর খাচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক। হুমায়ুন বলেন, ‘‘এক একটি শব্দের উচ্চারণ অত্যন্ত কঠিন। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, দাঁত ভেঙে যাবে। তবু নিজেই পড়ব। আত্মস্থ করতে চাই গীতা। আমি আমার ধর্মের প্রতি যেমন আস্থাশীল, তেমনই অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’’ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা পড়ে ফেলেছেন। তিনি বুঝেছেন, সনাতন ধর্ম সহনশীল এবং অহিংসার শিক্ষা দেয়। কিন্তু শুভেন্দুর প্রসঙ্গ উঠতেই আবার চটে গেলেন ‘বিতর্কিত’ বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘সনাতন ধর্মের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ গীতায় হাত রেখে শপথ করে বলতে পারি, হুমায়ুন কবীর থাকতে শুভেন্দু অধিকারী কোনও দিন মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবে না।’’

অন্য দিকে, হুমায়ুনের গীতাচর্চা প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘দেরিতে হলেও শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। হুমায়ুনবাবু যেন ভাল করে কর্মযোগ পড়েন। অধর্মের নাশ ঘটিয়ে ধর্ম প্রতিষ্ঠার অংশটিও হুমায়ুনবাবুর পড়ে ফেলা অত্যন্ত জরুরি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement