তৃণমূলের মোটরবাইক মিছিলে কাঁপল কল্যাণী

নিষেধাজ্ঞা ঝুলিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু, তাকে মান্যতা দিচ্ছে কে? বৃহস্পতিবার দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ে মোটরবাইক বাহিনী পথে নামিয়ে সেই বেপরোয়া মনোভাবই ফের দেকাল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৪
Share:

তৃণমূলের মোটরবাইক মিছিল। —নিজস্ব চিত্র

নিষেধাজ্ঞা ঝুলিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু, তাকে মান্যতা দিচ্ছে কে? বৃহস্পতিবার দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ে মোটরবাইক বাহিনী পথে নামিয়ে সেই বেপরোয়া মনোভাবই ফের দেকাল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার কল্যাণী এবং হরিণঘাটার তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণীর মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দেন। সেখানেই তাদের বিরুদ্ধে নিয়মবিরুদ্ধ এমন ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থও হয়েছে সিপিএম। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের দাবি, অতি উৎসাহী কেউ বাইক নিয়ে মিছিলে এলে তা তাঁদের দায় নয়।

Advertisement

বাইকে দলের কোনও ঝান্ডা ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বুধবার সিপিএম বিরাট মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। তার পর নিজেদের শক্তি জাহির করার জন্য পাল্টা বাইক-বাহিনী নিয়ে শাসক দলের এই ‘শক্তি প্রদর্শন’।

কমিশন কিন্তু সে কথা বলছে না। তাদের বক্তব্য, ঝান্ডা থাক বা না থাক, বাইক মিছিল করা যাবে না। যে দলের মিছিলে একাধিক বাইক থাকবে, বাইক মিছিলের দায় তাদেরই। কল্যাণীর মহকুমাশাসক স্বপন কুন্ডু বলেন, ‘‘আমি কোনও অভিযোগ এখনও পাইনি। পেলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’’

Advertisement

বুধবার হরিণঘাটা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রত্না ঘোষ কর মনোনয়নপত্র জমা দেন। ফলে এই মহকুমায় কল্যাণী ও হরিণঘাটা কেন্দ্রের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বাকি ছিল। বৃহস্পতিবার কল্যাণীর প্রার্থী রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এবং হরিণঘাটার প্রার্থী নীলিমা নাগ মল্লিক সকালে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। হরিণঘাটা থেকে প্রচুর সমর্থক বাসে করে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজের সামনে এসে জড়ো হন। অন্তত শ'খানেক সমর্থক বাইকে করে এসে সেখানেই জড় হন। সেখান থেকে মিছিল করে তাঁরা আসেন মহকুমাশাসকের অফিসে।

তার কিছুক্ষণ পর শহরের আইটিআই মোড় থেকে বিশাল মিছিল করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য বের হন রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। সেখানে রণ পা, ঘাসফুল ছাপ শাড়ির মহিলা সমর্থকদের পিছনেই প্রায় একশো মোটরবাইকের মিছিল। যদিও কোনও বাইকেই তৃণমূলের ঝান্ডা ছিল না। মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে এসে বাইকগুলি থেমে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রমেন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘তেমন কিছু ঘটেনি।'’’ তবে তাঁর সঙ্গে থাকা গয়েশপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মরণ দে বলেন, ‘‘এখানে আমাদের কিছু করার নেই। অতি উৎসাহী কেউ যদি বাইক নিয়ে চলে আসে, তাহলে আমাদের কী করার থাকতে পারে?’’ একই কথা বলছেন, হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথও। তিনি বলছেন, ‘‘আমরা কোনও বাইক মিছিল করিনি।’’ কল্যাণীর সিপিএম প্রার্থী অলকেশ দাস যা শুনে বলছেন, ‘‘'সারা শহর দেখেছে যে, ওরা বাইক মিছিল করেছে। নিজেদের মিছিলে শয়ে শয়ে লোক থাকলে তার দায় তো ওদেরই নিতে হবে। সেই দায় কী প্রশাসন নেবে? আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন