ধৃত কালু। নিজস্ব চিত্র
পাড়ার জলসা। মঞ্চ সঞ্চালনা করছেন শান্তনু শীল (৪০)। দর্শকের আসনে বসে তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেও। খুব কাছ থেকে একটি গুলি ছিটকে এসে লাগল শান্তনুর বুকের বাঁ দিকে। মঞ্চ থেকে নীচে পড়ে গেলেন তিনি। শূন্যে বেশ কয়েকটি গুলি ছুড়ে হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা।
রবিবার রাতে নদিয়ার চাকদহের কেবিএম এলাকার ওই ঘটনার পরে চাকদহের ২১ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য, যুব তৃণমূলের কর্মী শান্তনুকে নিয়ে যাওয়া হয় কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে। সেখানেই রাত আড়াইটে নাগাদ মারা যান তিনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, রাস্তায় বসে কয়েক জন নিয়মিত মদ খেয়ে গণ্ডগোল করত। তারই প্রতিবাদ করেছিলেন শান্তনু। সেই রাগ থেকেই দুষ্কৃতীরা তাকে গুলি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, পাড়ার ক্লাবের অনুষ্ঠান। সকালে ছিল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যার পরে জলসা। আচমকা মঞ্চের সামনে এসে জনা পাঁচেক যুবক হুমকি দেয়, ‘‘অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে।’’ মঞ্চের সামনে এসে তাদের কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন শান্তনু। ঠিক তখনই তাদের এক জন গুলি ছোড়ে।
শান্তনুর স্ত্রী সোমা সোমবার সকালে চাকদহ থানায় স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ দেবনাথ, সুমন রায় ওরফে হাম্পি, অমন রায় ওরফে কালু, বিশ্বজিৎ ঘোষ ওরফে ছ্যাকা বিশু ও গৌতম মণ্ডল ওরফে পুচুর নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। এ দিন সন্ধ্যায় মূল অভিযুক্ত অমন রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মাস কয়েক আগে বগুলাতে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, হাঁসখালির ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দুলাল বিশ্বাসকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এ দিন প্রকাশ্যে খুন হলেন শান্তনুও। এ দিন কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পুলিশের কাছে জানতে চান, ‘‘এখানে এত খুন হচ্ছে কেন? কেন পুলিশের কাছে কোনও খবর থাকছে না?’’ প্রসঙ্গত, এর আগেও জেলা সফরে এসে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘ওই খুনের ঘটনায় আমরা মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছি। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।’’