চাঁদা পাঁচশো, না দেওয়ায় মার চালককে

শাসক দলের টোটো চালক ইউনিয়নের সঙ্গেই ওঠাবসা তাঁদের। তবুও ফতোয়া জারি হয়েছিল— লাগবে পাঁচশো টাকা চাঁদা। মৃদু আপত্তি করায় দুই টোটো চালকের কাছ থেকে সারা দিনের উপার্জনই কেড়ে নেওয়াই নয়, উপরি জুটেছিল চড় থাপ্পর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৪
Share:

শাসক দলের টোটো চালক ইউনিয়নের সঙ্গেই ওঠাবসা তাঁদের। তবুও ফতোয়া জারি হয়েছিল— লাগবে পাঁচশো টাকা চাঁদা। মৃদু আপত্তি করায় দুই টোটো চালকের কাছ থেকে সারা দিনের উপার্জনই কেড়ে নেওয়াই নয়, উপরি জুটেছিল চড় থাপ্পর।

Advertisement

কোতোয়ালি থানায় তৃণমূল প্রভাবিত কৃষ্ণনগর টোটো চালক ড্রাইভারস ইউনিয়নের সম্পাদক তপন কুন্ডুর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ দায়ের করেছেন দুই টোটো চালক।

তপনের বিরুদ্ধে এমন দাদাগিরির অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। বছর খানেক আগেও হাটখোলা এলাকার বাসিন্দা মনশুর শেখ নামে এক টোটো চালক একই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে। বার বার একই অভিযোগ, অথচ তপন রয়েছেন স্বপদে। দলের একাংশ স্পষ্টই বলছে, ‘‘এতে যে দলের মুখ পুড়ছে, তা কি দাদাদের খেয়াল আছে!’’

Advertisement

ভাতজাংলার ভজন সাহা পিঠে মাথায় মারধরের দাগ দেখিয়ে বলছেন, “তপন কুন্ডু পরিষ্কার ফতোয়া দিয়েছিল মাসে পাঁচশো টাকা দিতে হবে। এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিল।’’ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় বেলডাঙা মোড়ে গাড়ি থামিয়ে ভজনের সারা দিনের উপার্জন কেড়ে নেওয়াই নয়, বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। ভজন বলেন, ‘‘আমার টোটোর চাবিটাও কেড়ে নিয়েছে।’’

গোবরাপোতার উত্তম সাহাও বলছেন, ‘‘দু’জন যাত্রী নিয়ে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলাম। এভি স্কুলের কাছে তপনদা যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বলল, ‘পাঁচশো টাকা ছাড়।’ না দিতে পারায় মারধর শুরু করল। সঙ্গে ছিল ৩২৫ টাকা, কেড়ে নিল।’’ ভজন এবং উত্তম জানান, পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে পুরসভার পুরপ্রধানকে দিয়ে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে তপন।

তপন অবশ্য বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ। টাকা চাওয়া দূরে থাক বরং গাঁটের পয়সা গুনেই আমি সংগঠনটা করি।’’ কৃষ্ণনগর পুরসভার পুরপ্রধান অসীম সাহা টোটো চালকদের ওই সংগঠনের সভাপতি। তিনিও তপনের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। বলছেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি। মিথ্যা অভিযোগ।’’

পুরসভার হিসেব বলছে, কৃষ্ণনগর শহরে পুরসভা অনুমোদিত টোটোর সংখ্যা সাড়ে চোদ্দশো। এ ছাড়াও চলছে হাজার তিনেক টোটো।
শহরে টোটো চালকদের ইউনিয়নটি শাসন করে তৃণমূল। তবে তাদের দু’টি গোষ্ঠী। বলাই বাহুল্য, তপন একটি গোষ্ঠীর মাথা। অভিযোগকারীরা তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর অনুগামী হওয়াতেই বিপত্তি। জুলুমবাজি কি সে কারনেই? দলের এক শীর্য নেতা তা মেনে নিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement