Transgender

হোম চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রূপান্তরকামীদের

জেলার বহু রূপান্তরকামীকে পারিবারিক সমস্যা-সহ নানা কারণে বাড়িতে বসবাস করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আবার কেউ কেউ ঘর ছাড়তেও বাধ্য হন। তাঁদের মতো সমস্যায় পড়া রূপান্তরকামীদের জন্য সরকারি হোমের দাবি জানিয়েছে রূপান্তরকামীদের সংগঠন ‘মধ্য বাংলার সংগ্রাম’।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০০:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

মনে নারী, শরীরে পুরুষ—ছোট বয়স থেকে অনুভব করতেন কান্দির পাঁচথুপি এলাকার এক রূপান্তরকামী। বছর তিনেক আগে ২৬ বছর বয়সী ওই রূপান্তরকামী নিজেকে প্রকাশ করলে বাড়ির লোকজন তাঁ মানতে চাননি। শুরু হয় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। শেষ পর্যন্ত আড়াই বছর আগে তিনি বাড়ি ছাড়েন। বর্তমানে চণ্ডীগড়ে নাচ-গান শিখিয়ে কোনওরকমে দিনযাপন করছেন।

Advertisement

বুধবার ওই রূপান্তরকামী বলেন, ‘‘বাড়ির লোকের অত্যাচারে ঘরছাড়া হয়েছি। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বর্তমানে চণ্ডীগড়ে আছি। আমার স্থায়ী কোনও ঠিকানা নেই। খুব কষ্টে আছি শুধুমাত্র রূপান্তরকামী হওয়ার জন্যই। সরকার আমাদের থাকার ব্যবস্থা করলে উপকার হয়।’’

তবে শুধু তিনি নন। তাঁর মতো আরও অনেকেরই সরকারের কাছে আবেদন, সরকার তাঁদের জন্য পাকাপাকি কোনও থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে দিক। বহরমপুরের রাধারঘাটের বছর আঠাশের এক রূপান্তরকামী জানান, ২০১২ সালে বাড়িতে নিজের ইচ্ছের কথা বলেছিলেন। সে সময় বাড়ির লোকজন তাঁকে প্রথমে বোঝান। তাতেও তিনি সিদ্ধান্ত থেকে পিছু না হটলে মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। অভিযোগ, সেই মানসিক নির্যাতন আজও চলছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মতো আরও অনেক রূপান্তরকামীই মানসিক, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হোন। তাই সরকার থাকার জন্য হোমের ব্যবস্থা করলে আর হেনস্থা হতে হয় না।’’ বহরমপুরের স্বর্ণময়ী এলাকার অপর রূপান্তরকামীর দাবি, ‘‘আমি মনে নারী, শরীরে পুরুষ। কিন্ত আমি শাড়ি, চুড়িদার পরি, বাড়ির লোকজন তা চান না। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলে।’’

Advertisement

জেলার বহু রূপান্তরকামীকে পারিবারিক সমস্যা-সহ নানা কারণে বাড়িতে বসবাস করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আবার কেউ কেউ ঘর ছাড়তেও বাধ্য হন। কেউ কেউ ভিন রাজ্য গিয়ে কোনও রকমে নিজের থাকা-খাওয়ার সংস্থান করছেন। তাঁদের মতো সমস্যায় পড়া রূপান্তরকামীদের জন্য সরকারি হোমের দাবি জানিয়েছে রূপান্তরকামীদের সংগঠন ‘মধ্য বাংলার সংগ্রাম’। সংস্থার সম্পাদক অরুণাভ নাথ গত ২৯ সেপ্টেম্বর মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক থেকে শুরু করে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হোমের দাবিতে চিঠি দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘ওঁদের দাবি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন