রাজু মর্গে, জ্ঞান হারালেন ভাই

কী মর্মান্তিক সমাপতন!দু’জনেই স্বামী হারিয়েছেন পাঁচ বছর আগে। দু’জনেরই তিন সন্তান। বহরমপুরের দুই মা তাঁদের সন্তানও হারালেন সেই একই দিনে। বহরমপুর লাগোয়া রঘুনাথতলা হাজরাপাড়া থেকে গোরাবাজার কষাইখানার ব্যবধান মেরেকেটে তিন কিলোমিটার। কিন্তু রবিবার রাতের দুর্ঘটনার পরে যেন একাকার হয়ে গিয়েছে ওই দু’টি এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৬
Share:

শোকার্ত মোহনের পরিবার।নিজস্ব চিত্র

কী মর্মান্তিক সমাপতন!

Advertisement

দু’জনেই স্বামী হারিয়েছেন পাঁচ বছর আগে। দু’জনেরই তিন সন্তান। বহরমপুরের দুই মা তাঁদের সন্তানও হারালেন সেই একই দিনে।

বহরমপুর লাগোয়া রঘুনাথতলা হাজরাপাড়া থেকে গোরাবাজার কষাইখানার ব্যবধান মেরেকেটে তিন কিলোমিটার। কিন্তু রবিবার রাতের দুর্ঘটনার পরে যেন একাকার হয়ে গিয়েছে ওই দু’টি এলাকা। সোমবার ওই দু’টি বাড়ির অনেক দূর থেকেই শোনা যাচ্ছিল কান্নার আওয়াজ। শোকস্তব্ধ দুই পরিবারের সদস্যদের ঘিরে রেখেছিলেন পাড়া-পড়শিরা।

Advertisement

রবিবার রাতে বেপরোয়া গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন বহরমপুরের রঘুনাথতলা হাজরাপাড়ার মোহন হাজরা ও গোরাবাজারের কষাইখানার রাজু শেখ। দুর্ঘটনার পরে বাড়ির ছোট ছেলে মোহন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে তাঁর মা ছায়াদেবীকে জানানো হয়। সে কথা শুনে ছেলের জন্য থালা-গ্লাস-বিছানার চাদর-বালিশ নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেন ছায়াদেবী। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছে তিনি দেখেন ছেলের নিথর দেহ।

একই অবস্থা রাজু শেখের ভাই নাজিমুদ্দিন শেখেরও। গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর দাদার মৃত্যুর খবরও প্রথমে তিনি বিশ্বাস করেননি। রবিবার রাতে পাড়া-প্রতিবেশীদের মুখে দাদার মৃত্যু খবর শোনার পরেও তিনি বলেছিলেন, ‘‘তোমাদের কোথাও ভুল হচ্ছে।’’ কিন্তু মর্গে গিয়ে দাদার মৃতদেহ দেখার পরেই তিনি সংজ্ঞা হারান।

রাজু শেখের মা নজুফা বেওয়া বলেন, ‘‘আমি নিজে মেসে রান্না করি। ছেলেটা ভ্যান রিকশা চালিয়ে সামান্য কিছু আয় করত। বৌমা-দুই নাতিকে নিয়ে এখন সংসার চালানো মুশকিল হয়ে গেল।’’ সন্তানহারা ওই মায়ের আর্তি, ‘‘যারা আমার তরতাজা ছেলেটাকে এ ভাবে শেষ করে দিল তাদের যেন কঠোর শাস্তি হয়।’’

মোহনের মা ছায়াদেবী বলেন, ‘‘স্বামী চলে গিয়েছেন পাঁচ বছর আগে। মোহনও কথা দিয়েছিল, আমাকে ছেড়ে ও কোথাও যাবে না। কিন্তু সবাই এক এক করে আমাকে ফেলে চলে গেল। এখন কাকে নিয়ে বাঁচব!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement