চুপিসাড়ে চলছেই জলের কারবার

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা কেই শখ করে জল কিনে খান না। এলাকার জলে আয়রন তো আছেই, আছে আর্সেনিকও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

অনুমোদন ছাড়াই জল প্রকল্প।

সম্প্রতি জলের কারবার নিয়ে প্রশাসন নড়েচড়ে বসতেই হরিহরপাড়া এলাকার বেশ কিছু জল-প্রকল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তাদের সেই দৌড়ঝাঁপ থিতু হতেই ফের শুরু হয়েছে জলের কারবার। অভিযোগ, আগের মতো প্রকাশ্যে সেই কারবার চলছে না ঠিকই। তবে চুপিসাড়ে চড়া দামে দিব্যি বিকোচ্ছে জারবন্দি জল। কেউ কেউ আবার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল বোতলবন্দি করেই বিক্রি করছেন।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা কেই শখ করে জল কিনে খান না। এলাকার জলে আয়রন তো আছেই, আছে আর্সেনিকও। তাই ভয়ে তাঁরা এলাকার নলকূপের জলে রান্নাবান্না করলেও তেষ্টা মেটান কেনা জলেই। কিন্তু সেই জলই কতটা পরিস্রুত বা স্বাস্থ্যসম্মত?

হরিহরপাড়ার মিজানুর রহমান বলছেন, ‘‘তা তো জানি না। কিন্তু ওই জলে আর যাইহোক আয়রন বা আর্সেনিক থাকবে না। কী বলেন?’’

Advertisement

স্থানীয় আর এক বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলছেন, ‘‘আমরা পড়েছি মহা সমস্যায়। যে জল কিনে খাচ্ছি তা কতটা পরিস্রুত, জানি না। আবার বাইরের জল খাওয়ারও উপায় নেই। সরকার তা হলে কিছু একটা ব্যবস্থা করুক। তেষ্টার জলকে নিয়ে এ ভাবে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই।’’

সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের কারখানায় হানা দিয়েছেন প্রশাসনের লোকজন। অনুমোদন না থাকা সহ-বেশ কিছু কারণে একাধিক জল-প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সেই ভয়ে হরিহরপাড়া, নওদার বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের কারবারিদের একাংশ তাঁদের প্রকল্পেরও ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছেন।

অভিযোগ, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। তাঁরা রাতের অন্ধকারে কুড়ি লিটারের জারে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল ভর্তি করে সেই জলই বিক্রি করছেন পঁচিশ থেকে তিরিশ টাকায়। প্রশাসনের নজর এড়াতে পলিথিনে ঢেকে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে জল।

কোথাও ট্যাপ থেকে কোথাও বা মূল পাইপের সংযোগস্থলের নাটবোল্ট ঢিলা করে লম্বা প্লাস্টিকের পাইপ জুড়ে কুড়ি লিটারের জারে ভরা হচ্ছে সেই জল। হরিহরপাড়ার বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যাল বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জানানো হবে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে জনবহুল এলাকায় একটি করে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের ইউনিট বসানো হবে। তা হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন