চলছে বিক্ষোভ। শুক্রবার বহরমপুর মাতৃসদনে তোলা নিজস্ব চিত্র।
এক প্রসূতির মৃত্যুকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ মাতৃসদন। শুক্রবার দুপুরে মারা যান সায়রাবানু বিবি (২৫) নামে এক প্রসূতি। বাড়ি বহরমপুর থানার বাজারপাড়ায়।
গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে ওই মহিলাকে মাতৃসদনে ভর্তি করানো হয়। রাতেই অস্ত্রোপচার হলে ওই প্রসূতি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। প্রসূতির স্বামী মিঠুন শেখের অভিযোগ, ‘‘সায়রাবানুর অস্ত্রোপচার হওয়ার ফলে স্বাভাবিক হাঁটাচলা করতে পারছিল না। তা সত্ত্বেও তাকে জোর করে হাঁটিয়ে তিন বার শয্যা বদল করতে বাধ্য করে আয়ারা। অস্ত্রোপচারের যন্ত্রণা নিয়ে হাঁটানোর ফলে আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে মারা যায়।’’
ওই প্রসূতির মৃত্যুর খবর বহরমপুর লাগোয়া বাজারপাড়া এলাকায় পৌঁছতেই প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়স্বজনেরা হাসপাতালে এসে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের একাংশ আয়াদের মারধর করেন বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মাতৃসদনে এসে পৌঁছয়। বিক্ষোভ থামাতে গেলে পুলিশের সঙ্গেও ওই পরিবারের সদস্যদের ধস্তাধস্তি হয় বলেও অভিযোগ। পরে উত্তেজনা চরম আকার নিলে পুলিশ বাধ্য হয়ে মাতৃসদনের দোতলার গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
তবে ওই ঘটনায় হাসপাতালে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে কোনও প্রসূতির মৃত্যু হলে প্রকৃত ঘটনা জানতে তদন্ত হয়। এক্ষেত্রেও তিন সদস্যের কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’
সম্প্রতি পড়শি জেলা নদিয়ায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে কার্যত ‘বিনা চিকিৎসা’য় দেড় বছরের এক শিশু মৃত্যু অভিযোগ ওঠে। তার পরপরেই ওই হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় একই অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন ঘটনায় বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছিল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা।