দু’দিন ধরে নিষ্প্রদীপ জঙ্গিপুর

মোমবাতিতে জেগে শহর

শনিবার ভাইফোঁটার সকালেও তাই নির্জলা জঙ্গিপুরের ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ডে ঘুরতে দেখা গিয়েছে পুরসভার জলের গাড়ি। হাসপাতালে নিরন্তর চলেছে জেনারেটর। আর পাড়ায় পাড়ায় দীপাবলীর ছায়া ধরে রেখেছে মোমবাতির আলো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৩
Share:

বিদ্যুৎ না থাকায় পুরসভার জল নিতে হুড়োহুড়ি। নিজস্ব চিত্র

নাগাড়ে বৃষ্টি সঙ্গে ঝড়। আর তাতেই লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে, রগুনাথগঞ্জ-জঙ্গিপুরের বিদ্যুৎ পরিষেবা। টানা দু’দিনেও নিষ্প্রদীপ শহরে আলোর দেখা নেই।

Advertisement

শনিবার ভাইফোঁটার সকালেও তাই নির্জলা জঙ্গিপুরের ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ডে ঘুরতে দেখা গিয়েছে পুরসভার জলের গাড়ি। হাসপাতালে নিরন্তর চলেছে জেনারেটর। আর পাড়ায় পাড়ায় দীপাবলীর ছায়া ধরে রেখেছে মোমবাতির আলো।

বিদ্যুৎ দফতরের কাছে অবশ্য প্রতি‌শ্রুতি ছাড়া মেলেনি কিছুই। শহরের আনাচ কানাচে কাজও চললেও আলো ফেরেনি শহরে।

Advertisement

বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, জঙ্গিপুর এবং রঘুনাথগঞ্জের এমন কিছু জায়গায় বিদ্যুতের তারের উপরে গাছ ভেঙে পড়েছে যেখানে মেরামত বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, বিপত্তি সে কারনেই।

দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার দিব্যেন্দু নন্দী বলেন, ‘‘গণ্ডগোল বাধিয়েছে জাম্পারগুলো। শহরের বেশ কিছু জায়গায় গাছ পড়েছে তারের উপরে। গাছ সরিয়ে মেরামতি করতে বেশ সময় লাগছে।’’

তবে, জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বিদ্যুৎ দফতররে কাজে তেমন খুশি নন। তিনি বলছেন, “আমরা তো আর বিদ্যুৎ ফেরাব না, যাদের কাজ, তাদের বহু বার ডেকেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে শুনেছি।’’

শুক্রবার সকাল থেকে জঙ্গিপুরে বিদ্যুৎ নেই। রাতে মিনিট পনেরোর জন্য এসেই ফের শহর আঁধার করে পিরে গিয়েছে সে। শনিবার সন্ধ্যেতেও দেখা নেই তার।

ফলে পানীয় জল সরবরাহ শিকেয়। এ দিন সকাল থেকে তাই পাড়ায় পাড়ায় ঘুরেছে পুরসভার জলের ট্যাঙ্কার। ভাইফোঁটার দিন এমনিতেই সাধারন মানুষের বাড়িতে আত্মীয়ের ভিড়। জলের খোঁজে তাই পুরসবার ট্যাঙ্কারের সামনে তাই লম্বা লাইন। তবে তাতেও সবার চাহিদা মেটেনি।

বিভিন্ন এলাকায় তা নিয়ে ক্ষোভ দেখিয়েছেন বাসিন্দারা। জঙ্গিপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি মোহন মাহাতো বলেন, “শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে কোনো নজরদারি নেই না পুরসভার, না বিদ্যুৎ দফতরের। যার ফল ভুগছেন শহরের করদাতারা।”

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহ রায়ও এ ব্যাপারে দুষছেন বিদ্যুৎ দফতরের পাশাপাশি পুর কর্তৃপক্ষকে। বলছেন, “সামান্য বৃষ্টি-ঝড়ে যদি দু’দিন বিদ্যুতহীন থাকা শহর কীই বা বলার থাকতে পারে।!’’

তবে, কয়েক লক্ষ মানুষের এই দুরবস্থার কতা জানেন না জেলার বিদ্যুৎ দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা অনুপকুমার মন্ডল। তিনি বলেন, “জঙ্গিপুরে যে দু’দিন বিদ্যুৎ নেই তাই তো জানি না। কেন এমন হল সেটা খোঁজ নিচ্ছি।’’ তবে, সে কোঁজ তিনি পেয়েছেন কি না জানানেই, শনিবার রাতেও নিষ্প্রদীপ থেকেছে গঙ্গা-পাড়ের দুই শহর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন