কল্পনা হালদার
আকাশের অবস্থা ভাল ছিল না। তাই ঝড়-বৃষ্টি আসার আগেই ভবাপাগলার মেলা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম। সঙ্গে ছিল একমাত্র মেয়ে কাকলি ও পড়শি দুই নাতনি। ঝড়বৃষ্টির জেরে কালনাঘাটে দীর্ঘক্ষণ ভুটভুটি চলাচল বন্ধ ছিল। লোকজনের ভিড় বাড়ছিল। পুলিশ একটি ভুটভুটির ব্যবস্থা করে মহিলাদের পারাপার করার কথা বলেছিল। সেই মতো ভুটভুটিতে মহিলারাই উঠছিলেন। কিন্তু কিছু যুবক আচমকা ভুটভুটির উপর লাফিয়ে উঠতেই ভাগীরথীতে তা উল্টে যায়। অন্যান্যদের সঙ্গে আমরাও নদীতে পড়ে গিয়েছিলাম।
তার পর আমরা চার জনই আলাদা হয়ে যায়। জলে হাবুডুবু খেতে খেতে কোনও মতে উপরে ওঠার চেষ্টা করছিলাম। কিছু পুলিশকর্মী দেখতে পেয়ে বাঁশ ও দড়ি ছুড়ে দেন। নদীর পাড়ে উঠে আসি। পুলিশকে বার বার করে বলতে থাকি, মেয়ে এবং পড়শি দুই নাতনিকে খুঁজে দিতে। দুই নাতনিকে পুলিশ জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। তবে আমার কাকলিকে ফিরে পাইনি। ভাগীরথীর দিকে তাকালে মনখারাপ হয়ে যায়।
শনিবার ওই ঘটনার এক বছর পূর্ণ হল। এ বারে ঘাটের দু’পারে প্রশাসন নিরাপত্তায় জোর দিয়েছে। গত বছর এমনটা করলে আমার মেয়েকে এ ভাবে অকালে চলে যেতে হতো না।
কালনায় নৌকা ডুবিতে মৃত কাকলি হালদারের মা, শান্তিপুর, নৃসিংহপুর