corona virus

ওড়িশা থেকে ফিরে বাস বাগানেই

মাস দেড়েক আগে তারা ওড়িশার সুন্দরগড়ের আত্মা এলাকায় কাঠের জিনিস বিক্রি করতে গিয়েছিল ওই গ্রামের বাসিন্দা সুজিত কুমার মণ্ডল,বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং তরুণ সরকার। লকডাউনের জন্য ছ’দিন আগে সেখান থেকে তিনটি সাইকেল কিনে বাড়ির পথে যাত্রা শুরু করেন।

Advertisement

সৌমিত্র সিকদার

ধানতলা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০১:১৯
Share:

বাগানে তাঁবুর সামনে। ধানতলায়। নিজস্ব চিত্র

বাগানের মধ্যে কাল পলিথিন দিয়ে তাঁবু খাটিয়েছে ওরা। গত তিনদিন থেকে সেখানেই রয়েছে এলাকার তিন যুবক। ধানতলা থানার রঘুনাথপুরে কাটারি গ্রামে বাগানের ওই তাবু এখন তাদের কোয়রান্টিন সেন্টার। বাড়ির লোকেরা দূরে খাবার দিয়ে যাচ্ছে। সেই খাবার খেয়ে তাদের দিন কাটছে।

Advertisement

মাস দেড়েক আগে তারা ওড়িশার সুন্দরগড়ের আত্মা এলাকায় কাঠের জিনিস বিক্রি করতে গিয়েছিল ওই গ্রামের বাসিন্দা সুজিত কুমার মণ্ডল,বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং তরুণ সরকার। লকডাউনের জন্য ছ’দিন আগে সেখান থেকে তিনটি সাইকেল কিনে বাড়ির পথে যাত্রা শুরু করেন। কারণ যানবাহন তত ক্ষণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পথে ঝাড়খণ্ডের কয়েক জন রক্ষী তাঁদের খাওয়ান এবং সাইকেল-সমেত একটি আনাজের গাড়িতে তুলে দেন। সেই গাড়িতে তাঁরা খড়্গপুর পর্যন্ত আসেন। সেখান থেকে আবার সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু যেহেতু ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন তাই আগাম সতর্কতা হিসাবে বাড়িতে প্রবেশ করেননি। বাগানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের রঘুনাথপুর হিজুলি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাটারি গ্রামের বাগানে সেই তাঁবুর সামনে দাঁড়িয়ে সুজিতকুমার মণ্ডল বলেন, “আমরা ওড়িশায় কাঠের জিনিস বিক্রি করতে গিয়েছিলাম। আমাদের কাছে টাকা ছিল কিন্তু খাবার পাচ্ছিলাম না। তাই সেখান থেকে চলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” তাঁর কথায়, “ওড়িশাতেই তিন জনে শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছি। কিছু পাওয়া যায়নি। এখানে আশা কর্মীরা আমাদের দেখে গিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, কোনও অসুবিধ হলে জানাতে। বাড়ির লোকেরা দূর থেকে খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। এ ভাবে এখানেই ১৪ দিন কাটাব।”

Advertisement

সুজিতের স্ত্রী অনুপমা মণ্ডল বলেন, “ঘরে বছর পাঁচেকের ছেলে রয়েছে। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছি না। স্বামীর এ ভাবে থাকতে অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু এ ছাড়া কোনও পথ নেই।’’ গ্রামের সকলে তাঁদের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন