জেলা পরিষদের বাংলো এখন সাপের আড্ডা

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ওই বাংলোয় একবার থেকে গিয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকও এক সময় হত সেখানে। কিন্তু আজ ওই বাংলোর হতশ্রী অবস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৩:০১
Share:

অযত্নের ছাপ চতুর্দিকে। নিজস্ব চিত্র

কান্দির গ্রামগুলিতে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু গ্রামীণ রাস্তা কংক্রিটের করা হয়েছে। বেশ কিছু মাটির রাস্তা পিচের হয়েছে। প্রতিটি ব্লকেই গড়ে উঠেছে নতুন নতুন কর্মতীর্থ ভবন। কোথাও জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে বাজার ভবন। ঠিক সেই সময় অবহেলায় পড়ে আছে কান্দি শহরের মধ্যেই জেলা পরিষদের ডাকবাংলো। শুধুমাত্র সংস্কারের অভাবে ওই বাংলো আজ ‘পোড়ো’ বাড়িতে পরিণত হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। কেন এই অবহেলা! উত্তর জানেন না বাসিন্দারা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ওই বাংলোয় একবার থেকে গিয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকও এক সময় হত সেখানে। কিন্তু আজ ওই বাংলোর হতশ্রী অবস্থা। ঠিক কী অবস্থা ওই বাংলোর! সেটাই এক নজরে দেখা যাক। কান্দি পুরসভার পাশেই ওই ডাকবাংলো। কিন্তু কান্দি রাজ স্কুলের সামনে দিয়ে যেতে হয় সেখানে। এক সময় ঝাঁ-চকচকে ছিল ওই বাংলোর প্রধান গেট থেকে তার চারদিক। বাংলোর সামনে ছিল যত্নে সাজানো বাগান। বাগানের অন্যদিকে একতলার তিনটি ঘর নিয়ে একটি বাংলো। বাংলোর পাশে জেলা পরিষদের অফিস ঘর। বাংলোর পিছনেও ছিল সবুজ বাগান। কিন্তু সে সবই আজ অতীত। ওই বাংলো চত্বরে যেতে হয় একটি নড়বড়ে গেট ঠেলে। যার অনেকাংশ ভেঙে গিয়েছে। বাংলোর সামনে থাকা সেই ছবির মতো বাগান আর নেই। শুকিয়ে গিয়েছে বাগানের ফুলগাছ গুলিও। জরাজীর্ণ বাংলোটি তার মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছে। গা থেকে খুলে পড়েছে পলেস্তারা। সামান্য বৃষ্টি হলেও ঘরের ভিতরে জল পড়ে। কতদিন যে রঙের প্রলেপ পড়েনি ওই বাংলোর গায়ে, তা কে জানে!আগে যেটা অফিসঘর ছিল, সেটি এখন ওই বাংলোর ভেঙে যাওয়া আসবাবপত্র রাখার গুদামঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনটি ঘরের মধ্যে দু’টি করে শয্যা ছিল। তার মধ্যে একটি ঘর ছিল ভিআইপিদের জন্য বরাদ্দ। অন্য দু’টি ঘরে দুই শয্যাবিশিষ্ট ঘর ছিল। ওই ঘর দু’টি সুসজ্জিত ভাবে সাজানো থাকলেও ওই ঘর দু’টির একদিনের ভাড়া ৫০ টাকা। কিন্তু সস্তার ঘর হলেও ওই বাংলোয় থাকার উপায় নেই। কারণ, কখন যে মাথার ওপর চাঙড় খসে পড়বে ঠিক নেই। সন্ধ্যার পর থেকে গাঁজা, মদ খাওয়া এমনকি জুয়ার আসরও বসে। এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু পাণ্ডে বললেন, “বাংলো এখন ভূতবাংলোয় পরিণত হয়েছে। জঙ্গলের চেহারা নিয়েছে বাংলো চত্বর।’’

যদিও জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, “জেলা জুড়ে জেলা পরিষদের প্রচুর জমি আছে, যেখানে বাংলো ছিল এখন সেটা ভেঙে পড়ছে। সংস্কার করা হচ্ছে না। কিন্তু এখন আর ওই বাংলোগুলির চাহিদাও নেই। তাই জেলা পরিষদের ওই জায়গাগুলিকে ব্যবসায়ীদের চুক্তির ভিত্তিতে দিয়ে কিছু করা যায় কি না, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন