ছাত্রনেতা তন্ময় আচার্য
মোটা টাকা নিয়ে ভক্তবালা বিএড কলেজে ছাত্রভর্তির অভিযোগ উঠেছে যে ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য সেই তন্ময় আচার্য নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বসার অনুমতি খুইয়েছেন। তাঁর ‘বি লিব’ পাঠ্যক্রমে উপস্থিতির খাতার হিসাব বলছে, ক্লাসে তাঁর হাজিরা মেরেকেটে চার শতাংশ। দু’টো সেমিস্টারের কোনও পরীক্ষাতেই তিনি বসেননি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, মে মাসেই তন্ময়কে ‘ডিসকলেজিয়েট’ করা হয়েছে। যার অর্থ, তিনি পরবর্তী পরীক্ষাগুলি দিতে পারবেন না। তন্ময়ের অবশ্য দাবি, তাঁকে ‘ডিসকলেজিয়েট’ করা হয়েছে এমন খবর তাঁর জানা নেই।
রানাঘাট কলেজে প্রাণিবিদ্যা নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা শুরু করেন তন্ময়। মাঝপথেই তা ছেড়ে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে নরসিংহপুর পলিটেকনিক কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর ২০০৯ সালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’বছরের বি টেক কোর্সে ভর্তি হন। ২০১১ সালে পাস করে ওই বছরই এমবিএতে ভর্তি হন। ২০১৩ সালে এমবিএ শেষ করে ফের বি-লিব (ব্যাচেলর অব লাইব্রেরি সায়েন্স)-এ ভর্তি হন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিনয়ী, নম্র ব্যবহারের জন্য পরিচিত তন্ময় পড়াশোনায় মাঝারি মাপের ছাত্র।
তবে স্নাতকোত্তরের পড়া শেষ করে ফের স্নাতকস্তরে পড়া শুরুর সময়ই তাঁর ভর্তিকে ঘিরে বিতর্ক হয়। তাঁর সহপাঠীদের একাংশ আপত্তি জানায়, ছাত্র রাজনীতির জেরে ক্ষমতা আর টাকার টানেই বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হচ্ছেন তন্ময়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, তৎকালীন উপাচার্য দিলীপ মহন্তকে ফোন করে গত বছর জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পন্ডা। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই তন্ময় বি লিব-এর এক বছরের কোর্সে ভর্তি হন বলে অভিযোগ। তন্ময় নিজে অবশ্য বলেন, ‘‘লেখাপড়ার নেশায় আর নিজের যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম। অন্য কোনও কারণে নয়। কিছু মানুষের হয়তো তা পছন্দ হয়নি।”
কিন্তু কল্যাণীর টিএমসিপি-র মধ্যেও ক্রমশ বিভাজন দেখা যায়। তৃণমূলের যে গোষ্ঠীর হাত ধরে তন্ময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন, ২০১৩ থেকেই সেই গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাধে মূলত ছাত্রভর্তিকে কেন্দ্র করে। ছাত্র ভর্তিতে তন্ময় দলের একাংশের অনুরোধ রাখছেন না, এমনটাই অভিযোগ ছিল। তার জন্য নিজেদের মধ্যে একাধিকবার মারামারিও হয়েছে। এরপরেই তন্ময় গোষ্ঠীবদল করেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।