কোকরাঝাড়ে অপহৃত চাকদহের বাসিন্দা

মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ দিতে অসমে গিয়ে অপহৃত হলেন রাজ্যের বাসিন্দা। অপহৃতের নাম তপনকুমার খাঁ। বাড়ি নদিয়া জেলার চাকদহ থানার পালপাড়ায়। গত ২৫ অক্টোবর অসমের কোকরাঝাড় জেলার আটিয়াবাড়ি শান্তিপুর এলাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। কোকরাঝাড়ের পুলিশ সুপার সুনীল কুমার বলেন, “গত ২৬ অক্টোবর আমরা অপহরণের খবর পাই। তারপর থেকেই উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গভীর জঙ্গলে তল্লাশির গতি অনেক কম। তবে তপনবাবুকে উদ্ধারের বিষয়ে আমরা আশাবাদী।” তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ বড়োল্যান্ড তপনবাবুকে অপহরণ করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

দিবাকর রায় ও সৌমিত্র সিকদার

কলকাতা ও চাকদহ শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১৩
Share:

তপনকুমার খাঁ

মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ দিতে অসমে গিয়ে অপহৃত হলেন রাজ্যের বাসিন্দা। অপহৃতের নাম তপনকুমার খাঁ। বাড়ি নদিয়া জেলার চাকদহ থানার পালপাড়ায়। গত ২৫ অক্টোবর অসমের কোকরাঝাড় জেলার আটিয়াবাড়ি শান্তিপুর এলাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। কোকরাঝাড়ের পুলিশ সুপার সুনীল কুমার বলেন, “গত ২৬ অক্টোবর আমরা অপহরণের খবর পাই। তারপর থেকেই উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গভীর জঙ্গলে তল্লাশির গতি অনেক কম। তবে তপনবাবুকে উদ্ধারের বিষয়ে আমরা আশাবাদী।” তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ বড়োল্যান্ড তপনবাবুকে অপহরণ করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

গত বছর ২২ নভেম্বর মিজোরামের মামিট জেলা থেকে অপহৃত হন ইন্দাসের বাসিন্দা দীপ মণ্ডল। চার মাস পরে চলতি বছরের মার্চে জঙ্গিদের হেফাজত থেকে মুক্তি পান দীপ। তপনবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঞ্চাশের তপনবাবুর আদি বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদে। বছর তিনেক আগে তিনি চাকদহ পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বড়কাজি এলাকায় বাড়ি করে বাস করছেন। ছেলে প্রতিম চাকদহ বাপুজি বালক বিদ্যালয়ের ছাত্র। তপনবাবু ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন জায়গায় বাক্স বসিয়ে মৌমাছি চাষ করতেন। মাসে ১৫ হাজার টাকার চুক্তিতে ৬ মাসের জন্য কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তাঁর কাজ ছিল অসমের গ্রামে বাসিন্দাদের মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ দেওয়া।

এ দিন চাকদহের বাড়িতে বসে তপনবাবুর স্ত্রী পারুল খাঁ কাপড়ের খুঁট দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলেন, “গত ১ অগস্ট অসমে গিয়েছিলেন। দুর্গাপুজোর সময়ে বাড়িও ফিরেছিলেন। লক্ষ্মীপুজোর পর আবার কাজে চলে যান। ২৬ অক্টোবর থেকে ফোন করে টাকা দাবি করা হচ্ছে।

Advertisement

প্রথমে ৮০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছিল। পরে তা ২০ লক্ষ টাকায় নেমে এসেছে। এখন বুঝতে পারছি না কী করবো।” তাঁর ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র প্রতিম বলে, “প্রথম ফোনটা আমি ধরেছিলাম। ওদিক থেকে বলা হয়, আমার বাবাকে অপহরণ করা হয়েছে। টাকা না পেলে ওরা বাবাকে খুন করার হুমকি দিয়েছে। আমরা দু’লক্ষ টাকা দিতে পারি বলায় ওরা বলে, বাবাকে খুন করে পাঠিয়ে দেবে। তার সঙ্গে দু’লক্ষ টাকাও পাঠিয়ে দেব বলে। তপনবাবুর পড়শি তথা বন্ধু স্বপন সেন বলেন, “আমরা একসঙ্গে মৌমাছি পালন করেছি। বারাসতে মৌমাছি পালকদের একটি সংগঠন আছে। সেখানেই আমাদের পরিচয় হয়েছিল। বছর তিনেক আগে আমার জমি কিনেই বসবাস শুরু করেছেন।” অপহরণকারীদের সঙ্গে তিনি নিজেও কথা বলেছেন বলে দাবি স্বপনবাবু।

যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তপনবাবুকে নিয়োগ করেছেন তাঁরাই অসম পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। কোকরাঝাড়ের পুলিশ সুপার সুনীল কুমার বলেন, “এর আগেও আরও প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদের মৌমাছি পালনে প্রশিক্ষণ দিতে গিয়েছেন। কিন্তু এমন হয়নি।” রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) শিবাজী ঘোষ বলেন, “জেলা পুলিশ সুপারকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। অসম পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন