কাজ নেই, ক্ষুব্ধ সিভিক পুলিশরা

চলতি মাস থেকে আচমকাই কাজ পাচ্ছেন না নদিয়া জেলার ২১টি থানার বেশ কয়েক হাজার সিভিক পুলিশ কর্মী। কাজ চেয়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মাঝে-মধ্যেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। লাভ হচ্ছে না তাতেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০১:০৮
Share:

চলতি মাস থেকে আচমকাই কাজ পাচ্ছেন না নদিয়া জেলার ২১টি থানার বেশ কয়েক হাজার সিভিক পুলিশ কর্মী। কাজ চেয়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মাঝে-মধ্যেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। লাভ হচ্ছে না তাতেও। পুলিশের বক্তব্য, চলতি মাসের শুরুতে সিভিক পুলিশদের নিয়ে সরকারি যে অর্ডার এসেছে, তা থেকে বিভ্রান্তি ছড়ার ফলেই কাজ দিতে সমস্যা হচ্ছে। কী সেই বিভ্রান্তি জানতে চাইলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অজয় প্রসাদ প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, ‘‘বিভ্রান্তি দূর হয়েছে। আশা করি দ্রুত কাজ পাবেন সিভিক পুলিশের কর্মীরা।”

Advertisement

২০১৩ সালের অক্টোবর নাগাদ গোটা রাজ্য জুড়েই প্রতিটি থানায় সিভিক পুলিশ নিয়োগ শুরু করে সরকার। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের মহিলা পরিচালিত থানা বাদে সমস্ত জায়গায় সিভিক পুলিশ নিয়োগ করা হয়। তার আগেই অবশ্য জেলা জুড়ে থানায়-থানায় ভিলেজ পুলিশ নেওয়া হয়েছে। ভিলেজ পুলিশ নিয়োগের ক্ষেত্রে ঠিক হয়, প্রতি অঞ্চল পিছু একজনকে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু সিভিক পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও নীতি-নির্দেশিকা ছিল না। প্রতিটা থানাতেই কয়েকশো করে সিভিক পুলিশের কর্মীকে নেওয়া হয়। যেমন চাপড়া থানাতে ৩৭৯ জন সিভিক পুলিশ রয়েছেন। নাকাশিপাড়া থানায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা গোটা তিরিশ। কিন্তু সিভিক পুলিশ হিসেবে ওই থানায় নেওয়া হয় ৪১৫ জন। যদিও বেশ কয়েকজন চুক্তি ভিত্তির ওই কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। এখন নাকাশিপাড়া থানায় ৩৮০ জন সিভিক পুলিশের কর্মী রয়েছেন। কিন্তু এত কাজ কোথায়? অগত্যা মাসে কুড়ি দিনও কাজ মেলে না এক-এক জনের। মজুরিও বড় মুখ করে বলার মতো তেমন কিছু নয়। কাজ করলে দৈনিক ১৪১ টাকা ৮২ পয়সা করে পান ওই যুবকরা। নিয়মিত মেলে না বলে তা নিয়েও ক্ষোভ যথেষ্ট।

এ দিকে, কোনও পরিচয়পত্র ও উর্দি ছাড়াই দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করতে হয় সিভিক পুলিশদের। পুজোর ভিড় সামলানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভিড় সামলাতে হয় তাঁদের। হাতে একটা লাঠিও পান না সব সময় (সচরাচর দশ জন সিভিক কর্মী পিছু চারটে করে লাঠি দেওয়া হয়)। কোনও পরিচয়পত্র না থাকায় সিভিক পুলিশের কর্মীদের কাজ করতে রীতিমতো সমস্যা হয়। দুই-একটা থানার ওসি অবশ্য নিজের উদ্যোগে সিভিক পুলিশের কর্মীদের নামমাত্র একটা পরিচয়পত্র দিয়েছে। নাকাশিপাড়া থানার সিভিক পুলিশ রাজেশ সাহা বলেন, ‘‘মাসখানেক আগে ভর সন্ধ্যায় সোনার দোকানে ডাকাতির পর ডিউটি করতে আমাদের সমস্যা হচ্ছিল। তখন ওসি আমাদের কাছ থেকে দশ টাকা করে নিয়ে একটা পরিচয়পত্র দিয়েছেন।”

Advertisement

এত হরেক সমস্যা সত্ত্বেও কাজটা তো ছিল। ১ জুলাই থেকে সেই কাজটাও পাচ্ছেন না সিভিক পুলিশের কর্মীরা। হতাশ সিভিক পুলিশরা বারবার ধর্না দিচ্ছে থানায়। চাপড়া থানার সিভিক কর্মী কামরুল বিশ্বাস ওরফে বাপি বলেন, ‘‘সামনে পরব। এই মাসেই কাজ নেই। কী ভাবে সংসার চালাব ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছি ন।” নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশায় সিভিক পুলিশরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন