বামেদের সঙ্গে জোট এখনও অনিশ্চিত, তবে স্থানীয় স্তরে বাম-কংগ্রেস ‘মিলিজুলি’ সৌহার্দ্য শুরু হয়ে গেল। সৌজন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
কান্দি পুরসভা দখলে রাখতে এ দিন তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন— কংগ্রেসকে সমর্থন করলে বাম সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলর স্বান্তনা রায়কেই পুর প্রধান করবে কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবার কান্দি আদালতে একটি মামলার আগাম জামিন নিতে এসেছিলেন অধীর। সেখানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “কান্দি পুরসভা কোন ভাবেই তৃণমূলের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। কংগ্রেস বাম সমর্থিত নির্দল সান্তনাকে পুর প্রধানের পদ ছেড়ে দেবে।”
অধীর চৌধুরীর এমন মন্তব্যে কান্দি জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বামেদের সঙ্গে জোটের প্রশ্নে অধীর যে এক পা বাড়িয়েই রয়েছেন দিল্লি গিয়ে হাইকমান্ডের কাছে সে কথা স্পষ্ট করে এসেছেন তিনি। হাইকমান্ড অবশ্য সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। যা দেখে, ঘনিষ্ঠ মহলে অধীর জানিয়ে দিয়েছেন, আর কিছু না হোক, যে সব জেলায় কংগ্রেসে শক্তিশালী, অর্থাৎ মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুএকক ভাবেই লড়বে কংগ্রেস। সেই সঙ্গে বামেদের পাশে পেতে তিনি যে এখনও হাল ছাড়ছেন না, এ দিন স্বান্তনাকে চেয়ারম্যানের টোপ দিয়ে সে পথই খোলা রাখছেন তিনি বলে মনে করছেন অধীর-অনুগামীরা।
কান্দি দখল করা যে তাঁর ‘চ্যালেঞ্জ’ ঘনিষ্ঠরা তা জানেন। অন্য দিকে, বোর্ড উল্টে দেওয়ার সবরকম তোড়জোড়ই যে সারা হয়ে গিয়েছে— শুক্রবার, তলবি সভার আগে, তোপ দেগেছে শাসক দলও। কংগ্রেসের পাঁচ কাউন্সিলারকে দলে টেনে ইতিমধ্যেই সে কাজের অর্ধেক সেরে রেখেছে তারা। দলীয় সূত্রেই খবর ছিল, কান্দি পুরসভার বাম সমর্থিত দুই নির্দল প্রার্থীর সঙ্গেও গোপনে যোগাযোগ রেখে চলেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। এমনকী অবশিষ্ট আট কংগ্রেস কাউন্সিলরের ‘কয়েকজন’ও তাদের দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তৃণমূল।
তবে, আজ, শুক্রবার তলবি সভা প্রায় ভেস্তে যেতে বসেছে। কেন?
কংগ্রেসের দাবি, তলবি সভার নোটিস না পেয়ে বৃহস্পতিবার তারা হাইকোর্টে মামলা করেছে। কংগ্রেসের আইনজীবী প্রতীপ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ, শুক্রবার, তলবি সভা হবে, তবে সেখানে পরবর্তী বৈঠকের তারিখ ছাড়া আর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।’’
যা শুনে সদ্য দলত্যাগী গৌতম রায় বলছেন, ‘‘কান্দির পতন রুখতে যে কোনও উপায়ে আমাদের আটকাতে চাইছে অধীরবাবু। কিন্তু এ বাবে আর কত দিন?’’