দুর্গাপুরে দুষ্কৃতীদের বেপরোয়া গুলি চালানোর ঘটনায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না। তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই এলাকার নৈশ প্রহরীদের সঙ্গে পাঁচ জন করে সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। কারা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে।”
তবে পুলিশ কর্তাদের দাবি, কোতোয়ালি থানার উদ্যোগে শুধু দুর্গাপুরেই নয় ওই এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে নৈশ পাহারা চালু হয়েছে। ফলে ওই এলাকায় সমাজবিরোধীদের দুষ্কর্মে অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে গরু পাচারকারীরা বেজায় সমস্যায় পড়েছে। তাই নৈশ প্রহরীদের উপরে হামলা চালিয়ে তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল তারা। বিশেষ করে তাদের ছোড়া গুলিতে যদি কোনও নৈশ প্রহরীর মৃত্যু হত তাহলে সেই ভয়ে অন্যত্রও রাতে পাহারা দেওয়ার লোক পাওয়া যেত না।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “গরু পাচার বন্ধ হয়ে গেলেই সমাজবিরেধীরা প্রচণ্ড চাপে পড়ে যায়। আর রাতে গ্রামবাসীরা জেগে থাকলে সেই কাজটা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের মনে হচ্ছে সেই কারণেই এ দিন দুর্গাপুরে বেপরোয়া গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।”
তবে বুধবার গভীর রাতে ওই ঘটনায় দুর্গাপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। গ্রামের নৈশ পাহারা চালু থাকবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু কোতোয়ালি থানার আইসি একাধিকবার দুর্গাপুরে গিয়ে সকলকে আশ্বস্ত করার পাশাপাশি প্রতিদিন রাতে পাঁচ জন করে সিভিক ভলিন্টিয়ার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। এলাকার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনতোষ সাহা বলেন, ‘‘আমরা কিন্তু সত্যিই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। পুলিশ এসে আমাদের আশ্বস্ত করায় নৈশ পাহারা বন্ধ করিনি। তবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীরা ধরা না পড়া পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছি না।”
কৃষ্ণনগরের নিরাপত্তা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই তোলপাড় চলছিল। তারপরে দুর্গাপুরে ওই ঘটনায় ফের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের অনেকেই। তৃণমূলের কিছু নেতা বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছেন বলেও মনে করছেন শহরের অনেকেই। তাছাড়া ওই ঘটনায় কেউ ধরা না পড়ায় এলাকার লোকজনও ক্ষুব্ধ।