এক মহিলাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। শান্তিপুরের ওই মহিলা ভিক্ষা করতেন। সোমবার সকালে এলাকার বাসিন্দারা বছর চল্লিশের ওই মহিলার দেহ বিবস্ত্র অবস্থায় মাঠে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীদের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও সফল হননি ওই মহিলা। জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রানাঘাটের এসডিপিও নিজে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন। তবে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই পরিষ্কার হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে ওই মহিলার স্বামী মারা যান। ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন ওই মহিলা। ভিক্ষা করে কোনও রকমে সংসার চালাতেন। দুই ছেলে বাইরে থাকেন। বাড়িতে তিনি তাঁর ছোট মেয়ের সঙ্গে থাকতেন। রবিবারও তিনি ভিক্ষা করতে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে স্থানীয় এলাকায় একটা মেলা বসেছিল। ওই মহিলা সম্ভবত সেখানেই গিয়েছিলেন ভিক্ষা করতে। সন্ধ্যার সময় মাঠের রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় তিনি দুষ্কৃতীদের শিকার হন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই মহিলার মুখে, সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। কিছুটা দূরে একটি আমবাগানের ভিতরে তাঁর জামাকাপড় ও চাল বোঝাই ভিক্ষার থলিটিও পড়েছিল। মহিলার বছর তেরোর মেয়ে বলে, “মাকে বলেছিলাম খেয়ে বের হতে। কিন্তু শুনল না। বলল ফিরে এসে খাব। কিন্তু আর খাওয়া হল না।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, একাধিক দুষ্কৃতী ওই মহিলার উপর চড়াও হয়েছিল। অন্য দিকে, এ দিন ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। গ্রামবাসীরা দাবি করেন, কুকুর নিয়ে এসে ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করতে হবে। পরে অবশ্য পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে দেহ নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।