রিপোর্ট পৌঁছেছিল আগেই এবার সবার শৌচাগার প্রকল্প স্বচক্ষে দেখতে এলেন ইউনিসেফের এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। সোমবার ওই সংস্থার রাজ্য প্রতিনিধি-সহ দিল্লি ও অন্যান্য রাজ্যের প্রতিনিধিরা নদিয়ায় এসে এই বছর জেলার ‘নির্মল বিদ্যালয়’ হিসাবে পুরষ্কার প্রাপ্ত চাকদহের কামালপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে যান। সেখানে তাঁরা স্কুলের শৌচাগার, মিড-ডে মিলের রান্না ও খাওয়ার জায়গা ঘুরে দেখেন। সেইসঙ্গে স্কুলের অন্যান্য পরিচ্ছন্নতা দিকগুলিও খতিয়ে দেখেন।
এদিন সন্ধে পৌনে ছ’টা নাগাদ স্কুলে ঢোকে প্রতিনিধি দলটি। তাঁরা ঘুরে দেখেন গোটা স্কুল। কথা বলেন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গেও। পরিবেশ দেখে তাঁরা খুশি বলেই জানান ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গের প্রধান আশাদুর রহমান। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে ১৩ টি রাজ্যে কাজ করছি। এই স্কুলটি যথেষ্ট উন্নত। অন্যান্য রাজ্যগুলি যাতে এই ‘মডেল’ অনুসরণ করে, সে বিষয়ে তাদের উত্সাহিত করব।”
কিন্তু প্রতিনিধি দল কেন পুরস্কারপ্রাপ্ত স্কুলেই গেল? এলাকার অন্য স্কুলগুলোর হাল যে এর থেকে অনেকাংশেই খারাপ সে কথা তো বলাই বাহুল্য। আশাদূর রহমান নিজেই জানান, “এমন একটা স্কুল দেখতে চাইছিলাম যারা সফল। তারা অন্যদের পথ দেখাতে পারবে। অন্যদের কাছে উদাহরণ হতে পারবে।”
গত বছরই নদিয়া জেলা প্রশাসন একশো দিনের কাজের প্রকল্প, নির্মল ভারত অভিযান ও জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন প্রকল্পের সমন্বয়ে জেলা প্রশাসনের ‘সবার শৌচাগার’ প্রকল্প চালু করেছিল। এই প্রকল্পে সফল্যের কারণে জাতীয় স্তরেও নদিয়া জেলার প্রশাসন পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু সেই প্রকল্পের প্রকৃত অবস্থা খতিয়ে দেখতে গত জুন মাসে ইউনিসেফের একটি প্রতিনিধি দল এই জেলায় আসে। শৌচাগার তৈরি হলেও সকলে কত শতাংশ মানুষ সেই শৌচাগার ব্যবহার করছেন তা নিজেদের মতো করে সমীক্ষা করে দেখেন তাঁরা। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখতে ইউনিসেফের এই উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি নদিয়া এসেছেন। মঙ্গলবার তাঁরা মায়াপুর ও জঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি জায়গা সরজমিনে খতিয়ে দখবেন। আশাদুর রহমান বলেন, “এখনও পর্যন্ত যা দেখলাম তাতে নদিয়া জেলা সারা দেশে নজির সৃষ্টি করেছে। আশা করছি অন্যান্য রাজ্যও এই জেলাকে অনুসরণ করবে।’’ তবে জেলার অন্যান্য এলাকা ঘুরে না দেখা পর্যন্ত এই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন ইউনিসেফ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে শৌচাগার ব্যবহ্যরের বিষয়টি সরজমিনে না দেখা পর্যন্ত প্রকৃত চিত্র পরিষ্কার হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।