সিপিএমের একজোট হয়ে দলেরই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল তৃণমূল। ২০ জন সদস্যবিশিষ্ট নদিয়ার গাংনাপুর থানার আঁইশমালি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩ জন সদস্য এই অনাস্থায় সই করেন। এর মধ্যে ৯ জন সিপিএমের এবং ৪ জন তৃণমূলের। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁরা রানাঘাট-২ নম্বরের বিডিওর কাছে প্রধান পুতুল গোলদারের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন জানান। তাঁদের অভিযোগ, স্বজন-পোষণ ও দুর্নীতির জন্য ওই প্রস্তাব আনা হয়েছে। রানাঘাট-২ বিডিও শিল্পী সিংহ বলেন, “আঁইশমালি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়েছে।”
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন তৃণমূলের, ৯ জন সিপিএমের এবং একজন নির্দল সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৃণমূলের পুতুল গোলদার প্রধান এবং নির্দল সদস্য দীপক সিকদার তৃণমূলে যোগ দিয়ে উপ-প্রধান নির্বাচিত হন। কিন্তু বোর্ড গঠণের পরই তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়ে যায় বলে দলের একাংশ সূত্রে খবর। ওই ঘটনায় তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁরা মনে করছেন।
পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের গৌতমপ্রসাদ মিত্র বলেন, “প্রধান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই স্বজনপোষণ করতে শুরু করেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। এমনকী বেশ কয়েক জন সদস্যকে অন্ধকারে রেখে তিনি কাজও করছেন। এর ফলে এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমরা অনাস্থার পথে হেঁটেছি।”
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অজয় বিশ্বাসও। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রধান পুতুল গোলদার বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য দলের কয়েক জন সদস্য সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসব করছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতের প্রধান পুতুল গোলদার রানাঘাট-২ ব্লকের সভাপতি ও রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক সমীর পোদ্দারের ও যাঁরা প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন, তাঁরা জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি বাণীকুমার রায়ের লোক বলে এলাকায় পরিচিত। সমীরবাবু বলেন, “অনেকেরই প্রধান হওয়ার ইচ্ছা জাগে। তাঁরাই এসব করছেন। পিছন থেকে তাঁদের কোনও-কোনও নেতা মদতও দিচ্ছেন। আমি বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” অন্য দিকে, বাণীবাবু বলেন, “এখানে গোষ্ঠী কোন্দল বলতে কিছু নেই। ওই প্রধানের বিরুদ্ধে অন্যান্য সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। সেটা নিয়ে জেলা নেতৃত্ব আলোচনায় বসবেন।”