তৃণমূলকর্মী কামাল শেখ খুনের চার্জ গঠন হল না বৃহস্পতিবারেও। এই নিয়ে ষষ্ঠ বার চার্জ গঠনের দিন ধার্য হয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী-সহ অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ না কেউ আদালতে গরহাজির থাকায় চার্জ গঠন করা যায়নি। কারণ চার্জ গঠনের সময় সব অভিযুক্তকেই এজলাসে হাজির থাকতে হয়। তবে এ দিন ষষ্ঠ বার চার্জ গঠন না হওয়ার পিছনে অভিযুক্ত নয়, রয়েছে বাদি পক্ষের ভূমিকা। অধীর চৌধুরীর আইনজীবী শুভানঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, “বহরমপুর আদালত থেকে মামলাটি বীরভূম জেলায় স্থানান্তরিত করার জন্য কামাল শেখের স্ত্রী নীলা হামিদ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের এজলাসে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। এই কারণে নিম্ন আদালতে ওই মামলা আপাতত স্থগিত রয়েছে।”
সরকার পক্ষের আইনজীবী আবু বক্কর সিদ্দিকি বলেন, “ওই মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের বক্তব্য জানানোর জন্য কলকাতা হাইর্কোট নোটিস করেছে। সেই সঙ্গে রিট পিটিশনের বিষয়ে হাইকোর্ট রায় না দেওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতে ওই মামলা স্থগিত রাখতেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অসীমকুমার রায়।” এই কারণে মুর্শিদাবাদ জেলা ও দায়রা বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস কামাল খুনের চার্জ গঠনের জন্য আগামী ১২ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন। ২০১১ সালের মে মাসের এক সন্ধ্যায় বহরমপুর শহরের মোহনের মোড়ে কামাল শেখকে খুন করা হয়।
কামালের ভাই জালাল শেখ বলেন, “ইচ্ছাকৃত ভাবে কখনও অধীর চৌধুরী, কখনও অন্য অভিযুক্ত আদালতে হাজির না থাকায় মামলার চার্জ গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই ভাবে তাঁরা ইচ্ছাকৃত ভাবে বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছেন। তা ছাড়া আদালতের কাঠগড়ায় সব অভিযুক্তকে দাঁড়াতে হলেও ব্যতিক্রম হয় অধীর চৌধুরির ক্ষেত্রে। তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর বদলে চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়। ওই প্রভাবশালী অভিযুক্তের নিরপেক্ষ বিচার এ রকম আদালতে সম্ভব নয় জানিয়ে আমার বৌদি গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইর্কোটে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। আমাদের দাবি নিরপেক্ষ বিচারের জন্য ওই মামলা সিউড়ি আদালতে স্থানান্তরিত করা হোক।”
সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, “বিচার ব্যবস্থার উপর আমার পূর্ণ আস্থা ও ভরসা রয়েছে। আদালতের নির্দেশ সব সময়ই আমার কাছে শিরোধার্য। কখনও লোকসভার অধিবেশন চলায়, কখনও নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় আদালতে হাজির হতে পারিনি। ওই সব সঙ্গত কারণ ছাড়া আমি কখনওই আদালতে গরহাজির থাকিনি।”
জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “অনুব্রতের জেলা বলেই ওই মামলা মুর্শিদাবাদ থেকে বীরভূমে স্থানান্তরিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। বীরভূমে মামলাটি স্থানান্তরিত করে হলে আমাদের নেতা অধীর চৌধুরীর যে কোনও ধরনের অনিষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভবনা দেখা দেবে।”