চলছে ব্যাডমিন্টন খেলা। নিজস্ব চিত্র।
ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। তাই জল শূন্য পুকুর হয়ে গেল স্টেডিয়াম। সেখানেই হালকা শীতের আমেজে সীমান্তের মহকুমায় চলছে ব্যাডমিন্টন।
পিছিয়ে পড়া ডোমকল মহকুমায় কোথাও ইনডোর স্টেডিয়াম নেই, কিন্তু তাতে থেমে নেই ক্রীড়া প্রেমীরা। এক এক জায়গায় এক এক রকমের আয়োজন। আর সে আয়োজন ঘিরে মানুষের উন্মাদনা। কোথাও হাঁটুজল থাকা শীতের পুকুরের জল তুলে ফেলে তৈরি হয়েছে ইনডোর, কোথাও বা পাড়ার এক ফালি জমি ঘিরে বাঁশ, কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছে গ্যালারি। আর সন্ধে হতেই ঝকঝকে আলোয় সেখানে বসে ভেঁপু হাতে পাড়ার দলকে উষ্ণ সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে কচিকাঁচারা। উৎসাহের খামতি নেই বড়দেরও। হাতে হাতে বাদাম চানাচুর। দু’পয়সা বাড়তি রোজগার ফেরিওয়ালাদেরও।
কেবল মহকুমাই নয়, জেলা এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খেলয়াড়েরা অংশ নিচ্ছেন এই খেলায়। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই খেলাগুলিতে অংশ নিচ্ছেন খেলোয়াড়রা।
সপ্তাহ খানেক আগে শুরু হয়েছিল জলঙ্গির এফইউসি ক্লাবের পরিচালনায় চারদিনের জেলা পযার্য়ের খেলা। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ডোমকলে শুরু হয়েছে রাজ্য পযার্য়ের খেলা। ২০ ফেব্রুয়ারি ফাইনাল খেলা।
প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা। জলঙ্গি এফইউসি ক্লাবের সামনে ছোট্ট পুকুর। তা-ই এখন ইনডোর। ক্লাবের সম্পাদক তুষার সরকার বলেন, “আমাদের এখানে ইনডোর তো দূরের কথা খেলার মতো ভাল জায়গাই নেই। তাই ছোট্ট ওই পুকুরটিকেই বেছেছি।”
এই বেছে নেওয়াটা রীতিমতো বুদ্ধি খাটিয়ে। পুকুরের খাদে খেলা হলে পাড়ে বসে গ্যালারির মতো খেলা দেখাও যায়। তুষারবাবু জানান, ৩২টি দল নিয়ে জেলা পযার্য়ের খেলার আয়োজনও এই পুকুর-স্টেডিয়ামেই।
জলঙ্গির নরসিংহপুর এলাকার খেলয়াড়েরাও ইনডোরের জন্য থেমে থাকেননি। প্রশাসনের কর্তাদের কাছে দরবার করে ফল না মেলায় তাঁরা শীতের শুরুতেই তৈরি করেছিলেন অস্থায়ী ইনডোর। প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করে। সেখানেই গোটা শীত মরসুমটায় চলেছে অনুশীলন। নরসিংহপুর ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশানের কর্মকর্তা রাজীব রায় বলেন, “শুধু ব্যাডমিন্টন নয়, এতে অনেক খেলার উন্নতি হবে।”
খেলার বাজেটও বেশ বড়। জলঙ্গিতে জেলা পযার্য়ের টুর্নামেন্টে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হলেও ডোমকলের বাজেট এ বছর প্রায় দেড়লক্ষ। রাজ্য পযার্য়ের খেলা ছাড়াও গ্যালারি তৈরিতে মোটা অঙ্কের খরচ হয়েছে বলে দাবি কর্মকর্তাদের। ডোমকল ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের তরফে পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, “এ বছর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম একটু খরচ বাড়লেও মানুষ যাতে ভাল ভাবে খেলা দেখতে পায় তার ব্যাবস্থা করব। তাই ইনডোরটা বানিয়ে ফেললাম।”