বন্ধ রয়েছে সাহায্য, অর্থাভাবে থমকে রোজিনার পড়াশোনা

মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সরকারি সাহায্য। অর্থাভাবে উচ্চশিক্ষার খোলা দরজা ফের বন্ধ হতে বসেছে রোজিনা খাতুনের। সাগরপাড়ার বাসিন্দা রোজিনা জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। দিনমজুর বাবা সাজাহান আলি খুবই কষ্ট করে রোজিনাকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০২
Share:

বাড়িতে রোজিনা খাতুন।—নিজস্ব চিত্র।

মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সরকারি সাহায্য। অর্থাভাবে উচ্চশিক্ষার খোলা দরজা ফের বন্ধ হতে বসেছে রোজিনা খাতুনের। সাগরপাড়ার বাসিন্দা রোজিনা জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। দিনমজুর বাবা সাজাহান আলি খুবই কষ্ট করে রোজিনাকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। ২০১১ সালে হাজারও প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে সাগরপাড়া হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাশ করেছিলেন রোজিনা। কিন্তু অর্থাভাবে তাঁর লেখাপড়া বন্ধ হতে বসেছিল। তারপর সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রকাশিত হতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তত্‌কালীন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মন্ত্রীর আর্থিক সহায়তায় রোজিনা ভূগোলে অনার্স নিয়ে ডোমকল কলেজে ভর্তিও হন। তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রোজিনা বলছেন, “মন্ত্রীর দফতর থেকে বছরে ৪৫ হাজার টাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। পরপর দু’বার সেই টাকা পেয়েছি। কিন্তু এ বছর ব্রাত্যবাবুর দফতর বদলে যাওয়ার পর আর সেই টাকা পাইনি।”

Advertisement

শুরু হয়েছে তাই অর্থকষ্ট। রোজিনার বাবা সাজাহান জানান, মন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন যে, পরবর্তী স্তরের পঠনপাঠনের যাবতীয় দায়িত্ব তাঁর দফতরের। কিন্তু এখন আর সেই সাহায্য মিলছে না। রোজিনার কলেজে যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে। কেনা হয়নি বেশ কিছু বই। বাকি পড়েছে বাড়ি ভাড়া, গৃহশিক্ষকের মাইনে।

স্ত্রী, দুই ছেলে আর রোজিনাকে নিয়ে সাজাহানের এমনিতেই টানাটানির সংসার। রোজিনা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বিভাগে পাশ করেছে। স্নাতক স্তরের কোনও কলেজ না থাকায় তাঁকে ভর্তি হতে হয় বাড়ি থেকে প্রায় ৩০ কিমি দুরে ডোমকলের বসন্তপুর কলেজে। রোজিনার কথায়, “উচ্চ মাধ্যমিকের পরে যখন ভাবছি আর হয়তো লেখাপড়া হবে না, ঠিক তখনই এগিয়ে এসেছিলেন তত্‌কালীন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর দফতর থেকে পাঠানো টাকায় এতদিন লেখাপড়া চলছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আর বোধহয় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। রোজিনার এক সহপাঠী সোনিয়া সরকার বলেন, “রোজিনা যে ভাবে লেখাপড়া করেছে তা ভাবলেও গায়ে কাঁটা দেয়। অর্থাভাবে ওর লেখাপড়া এখানেই বন্ধ হয়ে গেলে সেটা খুব কষ্টের হবে।” রোজিনার বাবা সাজাহান বলেন, “যিনি তত্‌কালীন শিক্ষামন্ত্রীর হয়ে বিষয়টি দেখতেন সেই আপ্ত সহায়ক আর ফোন ধরেন না। দিনকয়েক আগে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর দফতরেও গিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। ব্রাত্যবাবুর সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারিনি।” ডোমকলের মহকুমাশাসক পুষ্পেন্দু মিত্র বলেন, “অর্থাভাবে যাতে ওই ছাত্রীর পড়াশোনা বন্ধ না হয় তার জন্য আমরা সাহায্য করব। শিক্ষামন্ত্রীর দফতরেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement