বহরমপুরে রেলের দু’টি ওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য টাকা অনুমোদন করে দিয়েছে রেল মন্ত্রক। তবু রাজ্যের পূর্ত দফতরের সবুজ সঙ্কেতের অভাবে উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে না। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে বহরমপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ছিল এই দীর্ঘসূত্রিতা। বিধানসভায় পূর্ত দফতরের বাজেট-বিতর্কও এ বার তপ্ত হল একই প্রশ্নে।
পূর্ত বাজেটে অংশ নিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া বুধবার বহরমপুরের ওই জোড়া উড়ালপুলের প্রসঙ্গ তোলেন। রেল সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা মঞ্জুর করে দেওয়ার পরেও পূর্ত দফতর কেন ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) দিচ্ছে না, জানতে চান তিনি। পূর্ত বাজেট নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আচমকাই এ দিন বিধানসভায় ঢোকেন। পূর্তমন্ত্রীর জবাবি ভাষণের আগেই বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী দাঁড়িয়ে উঠে ফের ওই উড়ালপুলের প্রশ্ন তোলেন। স্পিকার এই বিষয়ে পূর্তমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পরেও কেন কাজ হচ্ছে না, মন্ত্রীর ব্যাখ্যা নেওয়ার জন্য স্পিকারের উদ্দেশ্যেই দাবি জানাতে থাকেন তিনি। তাঁকে সমর্থন করেন কংগ্রেসের অন্য বিধায়কেরাও। সভার উত্তেজনা বাড়ছে দেখে স্পিকার অবশ্য কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবকে অনুরোধ করেন তাঁর বিধায়কদের নিয়ন্ত্রণে আনতে!
এর আগে বহরমপুরের পঞ্চাননতলা ও চুঁয়াপুরে দু’টি রেল উড়ালপুলের বিষয়ে বিধায়ক মনোজবাবু পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও মন্ত্রীকে বিষয়টি দেখতে বলে চিঠি দিয়েছিলেন। কংগ্রেস বিধায়কদের আশা ছিল, পূর্ত বাজেটে মন্ত্রী হয়তো বিষয়টি নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেবেন। কার্যক্ষেত্রে পূর্তমন্ত্রী এ দিন অবশ্য ওই প্রসঙ্গে যানইনি! তাতে প্রবল ক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়কেরা। তাঁদের দাবি, বহরমপুরে ওই উড়ালপুল হলে প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর কৃতিত্ব পেয়ে যাবেন বলেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকার এনওসি আটকে রেখেছে!
পরে মনোজবাবু বলেন, “অত্যন্ত ন্যক্কারজনক কাজ করছে রাজ্য সরকার। ওই দু’টি উড়ালপুল হলে শুধু বহরমপুরের মানুষ উপকৃত হবেন, এমন নয়। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের করিডরের কাজও হবে। বারবার সরকারের কাছে দরবার করেও কাজ হচ্ছে না বলেই বিধানসভায় আজ এ ভাবে প্রতিবাদ করেছি।” মুখ্যমন্ত্রীকে সভায় দেখে স্পিকার এ দিন পূর্তমন্ত্রীর জবাবি ভাষণের সময় কমিয়ে পাঁচ মিনিট করে দিয়েছিলেন! পূর্তমন্ত্রী পরে ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, সময় পেলে তিনি ওই জোড়া উড়ালপুলের কথা বলতে পারতেন। সময়াভাবেই ওই প্রসঙ্গে আর যাওয়া হয়নি!