নবদ্বীপের ফুটবল মাঠগুলিতে সন্ধ্যা নামলেই বসছে মদ-জুয়ার আসর। রাতের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে হুল্লোড়ের বহর। নেশার সঙ্গে চলছে জুয়া, উচ্চস্বরে বাজছে হিন্দি গান। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এসব নিয়ে বলতে গেলে জুটছে হুমকি, অশ্রাব্য গালিগালাজ। স্থানীয় ক্লাবগুলোর অভিযোগ, গভীর রাত পর্যন্ত ওদের এই অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। এদিকে মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে রাখা হচ্ছে কাচের ভাঙা বোতল, মাংসের হাড়, ঠান্ডা পানীয়ের বোতল। সকালের অনুশীলনের অনেকটা সময় মাঠ পরিষ্কার করতেই চলে যাচ্ছে। খেলোয়াড়দের চোট কিংবা পা কাটা এখন রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন মাঠে জড়ো হচ্ছে বেশ কিছু বাইক। এক একটা বাইকে থাকছে দু’ থেকে তিন জন। তারপর নিজেদের পছন্দমতো জায়গা বেছে নিয়ে বসে যাচ্ছে আসর। নবদ্বীপ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং বিভিন্ন ক্লাবের তরফে এ নিয়ে নবদ্বীপ থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল। পুলিশি অভিযানে মাঝে কিছুদিন ওই উৎপাত বন্ধ ছিল। কিন্তু লোকসভা ভোট নিয়ে পুলিশ ব্যস্ত হয়ে পড়ায় গত মাস দেড়েক ধরে ফের তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। নদিয়া ক্লাব, কর্মন্দির, উদয়ন সংঙ্ঘ, অ্যাথলেটিক ক্লাব, প্যাক কোম্পানির মাঠ সহ প্রায় প্রতিটি বড় মাঠের খেলা বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্লাব কর্তারা জানাচ্ছেন, এখন ফুটবলের মরসুম। সকাল বিকেল অনুশীলনের সময়। কিন্তু ছেলেরা মাঠে নামতেই ভয় পাচ্ছে। নবদ্বীপ আজাদ হিন্দ ক্লাবের অন্যতম কর্তা সুব্রত দত্ত বলেন, “গত শুক্রবার সকালে অনুশীলনের সময় ক্লাবের প্রথম ডিভিসনের খেলোয়াড় শঙ্কর দাসের পায়ের আঙুল কাচে কেটে গিয়েছে।” উদয়ন সংঙ্ঘের প্রশিক্ষক মনোজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সত্যি কথা বলতে ছোটদের মাঠে নামাতেই ভয় লাগছে। রোজদিনই এই মাঠে মদের আসর বসছে। প্রশাসনের উচিত কড়া পদক্ষেপ করা।”
নদিয়া ক্লাবের প্রতিনিধি লালমোহন মোদক বলেন, “পুলিশের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এমনিতেই খেলাধুলো করার ছেলে কমে যাচ্ছে। তারপর এই ধরণের উপদ্রব চলতে থাকলে তো খেলা বন্ধ হয়ে যাবে।” নবদ্বীপের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “শুধু পুলিশ প্রশাসনের উপর ভরসা না করে আমাদের সবাইকেই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।” নবদ্বীপের আইসি তপন কুমার মিশ্র বলেন, “খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”