মৃত বালকের আত্মীয়ের বাড়ি ভাঙচুর, আগুন

রজত বিশ্বাস নামে এক বালকের দেহ উদ্ধারের পরে তারই আত্মীয়ের বাড়িতে শুক্রবার চড়াও হয় উত্তেজিত স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আশেপাশের কয়েকটি বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় চারটি বাড়ির বিভিন্ন জায়গায়।

Advertisement

মনিরুল শেখ

হাঁসখালি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩৬
Share:

রজত বিশ্বাস নামে এক বালকের দেহ উদ্ধারের পরে তারই আত্মীয়ের বাড়িতে শুক্রবার চড়াও হয় উত্তেজিত স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আশেপাশের কয়েকটি বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় চারটি বাড়ির বিভিন্ন জায়গায়। দিন তিনেক ধরে নিখোঁজ থাকার পর বাড়ি থেকে মেরেকেটে পঞ্চাশ মিটার দূরে পাট খেত থেকে রজতের দেহ উদ্ধার হয় বৃহস্পতিবার। ওই শিশুর দেহ মেলার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বগুলার গাঁড়াপোতা-কলাবাগান এলাকায় ওই শিশুটির বাড়িতে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন ভিড় করতে থাকে।

Advertisement

শুক্রবার সকালে এলাকার লোকজন পাড়ারই চার জনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি বাড়ির একাংশ। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ মৃতের জ্যাঠামশায় বিজন বিশ্বাসের শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ এলাকার ক্ষিপ্ত জনতা মৃত বালকের ওই আত্মীয়ের দু’কামরার টিনের বাড়িতে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালায়। ওই ব্যক্তির সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ রয়েছে পাড়ার এমন তিন জনের বাড়িও তছনছ করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন। উন্মত্ত জনতা ওই ব্যক্তির বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে আর এক গ্রামবাসীর নির্মীয়মান পাকা বাড়ি ভেঙেচুরে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ব্যক্তি কলকাতায় নির্মাণ কর্মীর কাজ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ভাঙচুর চলে।

সকাল দশটা নাগাদ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সহযোগিতায় পুলিশ জনতাকে বাগে আনে। স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ সরকার, প্রবীর সরকারদের কথায়, ‘‘সকাল থেকে ভ্যান ও অটোতে করে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক লোক জড়ো হয় সীমান্ত ঘেঁষা এই এলাকায়। তাঁরা ক্ষোভ সামাল দিতে না পেরে ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুরের বহর বাড়তে থাকায় আমরাও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করি।’’

Advertisement

এ দিন দুপুর একটা নাগাদ গ্রামে গিয়ে দেখা গেল একটি বাড়ির পাশ থেকে ধোঁয়া বার হচ্ছে। বাড়িতে লোকজনের কোনও পাত্তা নেই। সকলেই পলাতক। একই অবস্থা অন্য তিনটি বাড়িতেও। স্থানীয় গাজনা পঞ্চায়েতের সদস্য বিধান বিশ্বাস বলেন, “সম্প্রতি এলাকার ঘন ঘন চুরি হচ্ছিল। এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে সেই সব জিনিসের একাংশ উদ্ধার হয়েছে।” সেই বাড়িতে ভাঙচুর করে জনতা। পুলিশ অবশ্য এখনও এই খুনের কিনারা করতে পারেনি। শিশুটি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর দু’টি নম্বর থেকে শিশুটির দুই কাকার মোবাইলে ফোন ও মেসেজ যায়। সেই সূত্র ধরে পুলিশ বুধবার রাতে নবদ্বীপের বড়ালঘাট থেকে চৈতালি পাল ও প্রাচীন মায়াপুর থেকে সঞ্জয় দাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের আদালতে তোলার পর পুলিশ তাঁদের নিজেদের হেফাজতেও নিয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, ধৃতদের নিরবিচ্ছিন্ন জেরা করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসছে। নদিয়ার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “বিভিন্ন সম্ভবনার কথা মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। আশা করি দ্রুত ঘটনার কিনারা হবে। পড়শি বা কোনও আত্মীয়কে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ না দিয়েই তদন্ত এগোচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন