রিকশা-টুকটুক সংঘাত, উভয়সঙ্কটে পুরসভা

রিকশা ও টুকটুকের সংঘাতে পড়ে ‘শ্যাম রাখি না কূল রাখি’ অবস্থা রানাঘাট পুরসভার। রিকশা চালকদের অভিযোগ, বেআইনিভাবে শহরে টুকটুককে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। কোন নিয়ম না মেনে টুকটুক যাত্রী তুলছে। ফলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে তাঁদের। সবকিছু জানা সত্ত্বেও পুরসভা কিছুই করছে না বলে তাঁদের অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০৩
Share:

রিকশা ও টুকটুকের সংঘাতে পড়ে ‘শ্যাম রাখি না কূল রাখি’ অবস্থা রানাঘাট পুরসভার।

Advertisement

রিকশা চালকদের অভিযোগ, বেআইনিভাবে শহরে টুকটুককে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। কোন নিয়ম না মেনে টুকটুক যাত্রী তুলছে। ফলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে তাঁদের। সবকিছু জানা সত্ত্বেও পুরসভা কিছুই করছে না বলে তাঁদের অভিযোগ।

অন্য দিকে, টুকটুক চালকদের অভিযোগ, তাঁদের থেকে দিনে দশ টাকা টোল আদায় করছে পুরসভা। কিন্তু শহরের সব জায়গায় টুকটুককে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। টাকা দেওয়া সত্ত্বেও টুকটুক নিয়ে তাঁদের দাঁড়ানোর কোনও জায়গা নেই। পুরসভার অবশ্য দাবি, টুকটুকের কাছে থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু শহরে রাস্তায় টুকটুক চালানোর জন্য কোনও লাইসেন্সে দেওয়া হয়নি।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিকশার সংখ্যা ১৩৫০টি। অথচ শহরে তিন হাজারের বেশি রিকশা চলে। বেশির ভাগই রিকশা আসে আশপাশের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে। তার জন্য রিকশা চালকদের রুজি রোজগারে টান পড়ছে বলে দাবি পুরসভার।

বছর পাঁচের আগে নিয়মের তোয়াক্কা না করে ভ্যান চালকেরা পণ্য পরিবহণের জায়গায় যাত্রী তোলায় রিকশা চালকদের সঙ্গে তাদের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয়েছিল। সেই সমস্যা মিটতে না মিটতে শহরে টুকটুক এসে পড়ায় ফের বিপাকে পড়েছেন রিকশা চালকেরা। রিকশা চালক সমীর দফাদার বলেন, “সারাদিন রিকশা টেনে এখন একশো টাকাও রোজগার হচ্ছে না। সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ চালাব কী করে সেই চিন্তা সারাক্ষণ কুরে খায়।” রিকশা সংগঠনের সভাপতি শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভ্যানগুলো পণ্যের জায়গায় যাত্রী তুলছে। শহরে টুকটুক চলাচলের উপর পুরসভার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে আমাদের রুজি রোজগারে টান পড়ছে। অথচ পুরসভার কোনও হোলদোল নেই।”

অন্য দিকে, রানাঘাট টুকটুক ইউনিয়নের সম্পাদক সুকুমার বিশ্বাস বলেন, “শহর জুড়ে ৪১৪টি টুকটুক চলাচল করে। কম ভাড়ায় টুকটুক চেপে অনেক দূর যাওয়া যায়। ব্যাটারিতে চলায় শব্দ হয় না। কিছু রিকশা চালক যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমরা তা করি না। তাই যাত্রীরা টুকটুকে চাপতে বেশি পছন্দ করেন।” রানাঘাট পুরসভার পুরপ্রধান ও বিধায়ক তৃণমূলের পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “টুকটুক চালকদের কোনও লাইসেন্স পুরসভা দেয়নি। তারা নিজেরাই শহরে ঢোকে।” তবে শহরে যাতে টুকটুক চলাচলের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আনা যায় তার চিন্তাভাবনা চলছে বলে তিনি জানান। টোল নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, “শহরে ঢোকার জন্য সব গাড়ির কাছ থেকে আমরা টোল নেই। টুকটুকের কাছ থেকেও সেই টোল নেওয়া হয়।” রিকশা প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, “রিকশা ভাড়ার একটি তালিকা রয়েছে। চালকদের অনেকেই তা মানেন না। অনেক রিকশাচালক যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকেন। সেই দিকে যাতে বিশেষ নজর দেওয়া যায় তার জন্য আমাদের কর্মীদের বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন