রেজিনগরে অধীরের জোর প্রচার, হুমায়ুন ব্যস্ত মমতার সভা নিয়ে

জেলার এক প্রান্তে ‘দাদা’। অন্য প্রান্তে ‘দিদি’। কিন্তু লড়াইটা এখানে ‘দাদা-ভাই’য়ের। ‘দাদা’ অধীর চৌধুরী তাই প্রথম প্রচার শুরু করছেন ‘ভাই’ হুমায়ুন কবীরের খাসতালুক মুর্শিদাবাদের রেজিনগর বিধানসভা থেকে। বৃহস্পতিবার, বিকেল তিনটেয় দোপুকুরিয়া ফুটবল ময়দানে সেই কর্মিসভা। আর হুমায়ুন ব্যস্ত ‘দিদি’র সভা সামলাতে। আজই, বিকেল চারটেয় লালবাগে কর্মিসভা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩০
Share:

জেলার এক প্রান্তে ‘দাদা’।

Advertisement

অন্য প্রান্তে ‘দিদি’।

কিন্তু লড়াইটা এখানে ‘দাদা-ভাই’য়ের।

Advertisement

‘দাদা’ অধীর চৌধুরী তাই প্রথম প্রচার শুরু করছেন ‘ভাই’ হুমায়ুন কবীরের খাসতালুক মুর্শিদাবাদের রেজিনগর বিধানসভা থেকে। বৃহস্পতিবার, বিকেল তিনটেয় দোপুকুরিয়া ফুটবল ময়দানে সেই কর্মিসভা। আর হুমায়ুন ব্যস্ত ‘দিদি’র সভা সামলাতে। আজই, বিকেল চারটেয় লালবাগে কর্মিসভা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ থেকে বহরমপুরে আসবেন মমতা। সেখান থেকে সড়কপথে লালবাগ আস্তাবল ময়দানে ওই কর্মিসভায় যাবেন তিনি। উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, “তৃণমূলনেত্রী কর্মিসভায় প্রচারের রূপরেখা ঠিক করে দেবেন। তাঁর নির্দেশ মেনে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের প্রচার শুরু হবে।” বুধবার দুপুরে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীর ও মন্ত্রী সুব্রত সাহা ওই সভার কাজের তদারকিতে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেনও যান লালবাগে। সব মিলিয়ে মমতার কর্মিসভাকে ঘিরে জেলা তৃণমূল নেতাদের ব্যস্ততা তুঙ্গে।

বছর দেড়েক আগেও অধীর চৌধুরীর সঙ্গে হুমায়ুন কবীরের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ‘মধুর’। কিন্তু ব্যবসায় টাকা-পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে দু’জনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

পরে হুমায়ুন তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তিক্ততা আরও বাড়ে। সেই হুমায়ুনের বাড়ি থেকে মাত্র দু’শো মিটার দূরে আজ প্রথম কর্মিসভা করছেন অধীর। কংগ্রেসের অন্দরের খবর,

গত ১৬ মার্চ রাতে দিল্লি থেকে স্থানীয় ব্লক কংগ্রেস নেতৃত্বকে ফোন করে অধীরই রেজিনগর বিধানসভা এলাকায় কর্মিসভা আয়োজনের নির্দেশ দেন। ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে কর্মিসভার ওই জায়গাও ঠিক করে দেন তিনিই।

বেছে-বেছে কর্মিসভা এখানেই কেন?

স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, হুমায়ুনের এলাকায় ঢুকে মুখের উপর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতেই ‘ডাকাবুকো’ অধীরের এমন সিদ্ধান্ত। বেলডাঙা-২ (পশ্চিম) ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ইন্দ্রনীল প্রামাণিক বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই রেজিনগর বিধানসভা এলাকার কংগ্রেস কর্মীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। দু’দিন আগে প্রাক্তন সোমপাড়া-১ পঞ্চায়েত প্রধান কংগ্রেসের সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়কেও মারধর করা হয়েছে। তিনি এখনও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই অবস্থায় কংগ্রেস কর্মীদের মনোবল বাড়াতেই অধীর চৌধুরী ওই জায়গা কর্মিসভা করার জন্য বেছে নিয়েছেন।” অধীরের কথায়, “রেজিনগর বিধানসভা এলাকায় বিশেষ করে শক্তিপুরে গণ্ডগোল হচ্ছে। প্রতি দিনই দেখা যাচ্ছে, ওই এলাকার কোথাও না কোথাও অপ্রীতিকর কিছু ঘটছে। সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাই এখানেই প্রথম সভা।”

চ্যালেঞ্জটা লুফে নিয়েছেন হুমায়ুনও। তাঁর পাল্টা তোপ,

“প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে সামনে রেখে কংগ্রেস কর্মীরা যদি মনে করেন তাঁরা ক্ষমতা প্রদর্শন করবেন আর তৃণমূল চুপ করে বসে থাকবে, তা হলে তাঁরা ভুল ভাবছেন। কংগ্রেসের মোকাবিলা কী ভাবে করতে হয় তা হুমায়ুনের জানা আছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন