রানাঘাটে পদ্মে নির্দলের কাঁটা

কমল ফোটার আগেই তিনি বিক্ষোভের কাঁটা বিছিয়ে দিলেন। তিনি বিজেপির রাজ্য কিষান মোর্চার সহ-সভাপতি সুভাষচন্দ্র সরকার। লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী না করায় নির্দল হয়ে ভোটে লড়ছেন তিনি। রেলের অবসরপ্রাপ্ত পদস্থ আধিকারিক সুভাষবাবু রাজনীতি তথা বিজেপিতে যোগ দেন ২০১১ সালে। প্রথমে তিনি বিজেপির নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে জেলা কিষাণ মোর্চার সহ সভাপতি হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৪ ০০:২৪
Share:

কমল ফোটার আগেই তিনি বিক্ষোভের কাঁটা বিছিয়ে দিলেন। তিনি বিজেপির রাজ্য কিষান মোর্চার সহ-সভাপতি সুভাষচন্দ্র সরকার। লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী না করায় নির্দল হয়ে ভোটে লড়ছেন তিনি।

Advertisement

রেলের অবসরপ্রাপ্ত পদস্থ আধিকারিক সুভাষবাবু রাজনীতি তথা বিজেপিতে যোগ দেন ২০১১ সালে। প্রথমে তিনি বিজেপির নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে জেলা কিষাণ মোর্চার সহ সভাপতি হন। ২০১৩ সালের মে মাস থেকে সুভাষবাবু বিজেপির রাজ্য কিষাণ মোর্চার সহ সভাপতি।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের লোকসভা ভোটে রানাঘাট আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রথম থেকেই তৎপর ছিলেন সুভাষবাবু। নিজেকে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে সুভাষবাবু বলেন, “নদিয়া জেলা নেতৃত্বের একাংশ চাননি আমি প্রার্থী হই। আমি স্পষ্ট কথার মানুষ বলে ওঁরা আমাকে পছন্দ করেন না।”

Advertisement

২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়ে সুভাষবাবু বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর স্পষ্ট হয়ে যায় যে, প্রার্থী হিসেবে তাঁর আবেদন গুরুত্ব পায়নি। রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় সুপ্রভাত বিশ্বাসকে। ২২ মার্চ বিজেপির রাজ্য দফতরে সুভাষবাবুর অনুগামীরা রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী বদলের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভও দেখান। তবে এসবে গুরুত্ব দেননি দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সুপ্রভাত বিশ্বাসকে রানাঘাট আসনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তে তাঁরা অনড় থাকেন। বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হওয়ার কোনও আশা নেই দেখে শেষ পর্যন্ত সুভাষবাবু নির্দল হয়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন, ২৪ এপ্রিল তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নও জমা দেন।

সুভাষবাবু বলেন, “আমার প্রার্থী পদের আবেদন সমর্থন করে জেলা বিজেপির নানা স্তরের কুড়ি জন পদাধিকারী স্বাক্ষর করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন এমন মানুষ যেমন আছেন তেমনই বিভিন্ন ব্লক ও অঞ্চলের পদাধিকারীরাও ছিলেন। কিন্তু দলের নদিয়া জেলা সভাপতির আপত্তিতেই বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে প্রার্থী করেননি। উল্টে যাঁরা আমার আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন তাঁদের অনেককেই দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

সুভাষবাবুর প্রতীক চিহ্ন ঘুড়ি। প্রচারের জন্য লিফলেট, ফ্লেক্সে তিনি লিখছেন ‘বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মী সমর্থিত রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী’। যদিও তাঁকে কোনও ভাবেই আমল দিতে রাজি নন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। বিজেপির নদিয়া জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী বলেন, “কে কোথায় দাঁড়াচ্ছে তা নিয়ে ভাবার সময় কোথায়? উনি প্রতিবারই ভোটের সময় নির্দল হয়ে দাঁড়ান। এসবে গুরুত্ব দিলে চলে না।”

অন্য দিকে রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী সুপ্রভাত সরকার বলেন, “উনি তো এখানকার বাসিন্দাই নন। থাকেন দক্ষিণেশ্বরে। ভোটের জন্য বগুলাতে থাকা শুরু করেছেন। এসব ভুঁইফোঁড়কে দল কেন প্রার্থী করবে? যেভাবে উনি বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা বলে প্রচার করছেন তাতে ওঁর বিরুদ্ধে দলকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলব।” সুভাষবাবুর অভিযোগ, “আমাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছি।”

এই মোদী হাওয়ায় ঘুড়ি ভোকাট্টা হয়ে যাবে না তো? প্রত্যয়ী সুভাষবাবুর উত্তর, “অনেক কিছুই হতে পারে। ঘুড়ির ছায়ায় পদ্মবনও ঢেকে যেতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন